• কলকাতা শহরের ‘রুফটপ’ রেস্তরাঁ বন্ধের নির্দেশ পুরসভার, মেছুয়ার অগ্নিকাণ্ডের পরেই সিদ্ধান্ত নিলেন মেয়র ফিরহাদ
    আনন্দবাজার | ০২ মে ২০২৫
  • শহরের সমস্ত ‘রুফটপ’ রেস্তরাঁ আপাতত বন্ধ রাখতে হবে, এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের পর মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। মেছুয়া এলাকার ঋতুরাজ হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে শহরের ছাদনির্ভর রেস্তরাঁগুলির নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে মেয়র সাফ বলেছেন “ছাদ কমন এলাকা। নীচের জায়গা যেমন কেউ বিক্রি করতে পারেন না, তেমন ছাদও বিক্রি করা যায় না।”

    পুরসভা ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ছাদ কোনও ভাবেই ব্যক্তিগত ব্যবসার কাজে ব্যবহার করা যাবে না। রেস্তরাঁ নির্মাণের জন্য ছাদ বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ‘রুফটপ’ রেস্তরাঁগুলিকে অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়র বলেন, “যে সব রেস্তরাঁ ছাদে চালু রয়েছে, সেগুলি বন্ধ করতে হবে। নীচে আগুন লাগলে মানুষ যাতে ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারেন, সেই পথ খোলা রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।” তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ইতিমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুরসভার কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বৈঠকে বসা হবে। সেখানে দমকল, পুলিশ এবং পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। মেয়র বলেন, “সব বিষয় পুরসভার হাতে নেই। তবে যেখানে আমাদের দায়িত্ব রয়েছে, সেখানে আমরা সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছি।”

    এরই মধ্যে শহরের একটি বহুল পরিচিত বহুতল ভবন, ম্যাগমা হাউসের উপরের রেস্তরাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। মেয়র জানিয়েছেন, বরোভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে, কোন কোন এলাকায় কতগুলো রুফটপ রেস্তরাঁ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ছাদে আশ্রয় নেওয়ার প্রবণতার বিষয়টি তুলে ধরে মেয়র বলেন, “স্টিফেন কোর্টে কোলাপসিবল গেট বন্ধ থাকায় দমবন্ধ হয়ে অনেকেই মারা গিয়েছিলেন। ইমার্জেন্সি গেট অকার্যকর হয়ে গেলে ছাদই শেষ ভরসা। তাই ছাদে যেন কোনও বাধা না থাকে।”

    মেছুয়ার ফলপট্টির ক্ষতিগ্রস্ত ভবন সম্পর্কে মেয়র বলেন, “ওই বিল্ডিংয়ের অডিট করা হয়েছিল। সাধারণ নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশে শুধু সরকারের উপর সব কিছু চাপানো যায় না। নাগরিকদেরও সচেতন থাকতে হবে।” তিনি আরও বলেন, ‘‘পুরসভার কর্মী অপ্রতুল, সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তবুও দায়িত্ব পালনে কোনও খামতি রাখা হবে না।’’ যে সব ভবন এখন নির্মীয়মাণ, সেখানেও নতুন করে নজরদারি চালানো হচ্ছে। যেখানে বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদিত হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্ত তথ্য রেকর্ডে আনা হবে বলে জানাচ্ছে কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)