ব্লগার, সেলফিপ্রেমীদের পোস্টে মহানগরের স্কাইলাইনের বিশেষ আবেদন রয়েছে। তিলোত্তমার বহুতল, ফ্লাইওভার পিছনে রেখে পানীয়ে চুমুকের ছবি, অস্তাচলে যাওয়া সূর্যের শট নেওয়ার সেরা জায়গাই তো হল শহরের রুফটপ রেস্তরাঁগুলি। কিন্তু এ বার শীঘ্রই বন্ধ হতে চলেছে কলকাতার সমস্ত রুফটপ রেস্তরাঁ। বড়বাজারের ঋতুরাজ হোটেলের অগ্নিকাণ্ডের জেরে বড় সিদ্ধান্ত। শহরে আর কোনও রকম রুফটপ রেস্তরাঁ থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিন ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত শহরের যাবতীয় রুফটপ রেস্তরাঁ বন্ধ রাখতে হবে। এ বিষয়ে রাজ্য সরকার একটি কমিটি গঠন করছে বলেও জানান মেয়র। তিনি বলেন, ‘কেউ ব্যবসা করছেন ঠিক আছে। কিন্তু তাঁকে এটাও তো খেয়াল রাখতে হবে যাতে তাঁর জন্য অন্য কারও ক্ষতি না হয়। নাগরিক দায়িত্ব বলে তো একটা বিষয় আছে।’
এখানেই শেষ নয়, মেয়র বলেন, ‘ছাদ একটা কমন জায়গা। কোনও ভাবেই সেটাকে ব্লক করা যাবে না। ইতিমধ্যেই যে রেস্তরাঁগুলি হয়ে গিয়েছে, সেগুলিকে আমরা খুলে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছি।’ ছাদের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে তিনি ঋতুরাজের ঘটনা টেনে এনে বলেন, ‘ছাদে না উঠলে ওই ১৫ জনও বাঁচত না। হোটেলের এমারজেন্সি এক্সিটটাকে বন্ধ করে গোডাউন করে ফেলেছিল। স্টিফেন কোর্টের সময়েও লোকে বাঁচতে ছাদের দিকে দৌড়েছিল। কিন্তু গেট বন্ধ থাকায় সবাই ওখানেই পুড়ে মারা যায়।’
তবে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য নিয়ে কিছুটা হলেও ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে রেস্তরাঁ মালিকদের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়র কোন ধরনের রুফটপ রেস্তোরাঁর কথা বলছেন তা স্পষ্ট নয়। যেখানে ওপেন স্পেসে রুফটপ রেস্তরাঁ চালানো হচ্ছে, বিশেষ করে কমার্শিয়াল বিল্ডিংয়ে রুফটপ রেস্তরাঁ পারমিশন নিয়ে করা হয়েছে, সেটা কী ভাবে বন্ধ করা যাবে তা নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে। বাড়ির ক্ষেত্রে যাঁরা খোলা ছাদে রুফটপ রেস্তরাঁ চালাচ্ছে, তাঁদের নিয়ে সম্ভবত সমস্যা নেই। তবে এ বিষয়ে পুরসভার তরফে নোটিফিকেশন এলে সবটা স্পষ্ট হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।