• অভাবকে সঙ্গী করেই মাধ্যমিকে দুরন্ত রেজাল্ট, ভবিষ্যতের জন্য সাহায্য প্রার্থনা দিশার
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ এমন অভাবের সংসারে আজ সব দুঃখ ভুলিয়ে দিতে হাজির সাফল্যের আলো। বাবা বিশ্বনাথ দিন মজুর এবং মা সুমিত্রা বাড়ির কাজ সামলান। তাদের মেয়ে দিশা দপ্তরী এ বছর মাধ্যমিকে দুর্দান্ত রেজ়াল্ট করে পরিবারকে দেখিয়েছে আশার আলো। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের মথুরাপুরের এই পরিবারের কাছে আজ উৎসবের দিন।

    অভাবের সংসারে পেটের ভাত জোগাতে গিয়ে পড়াশোনার সঙ্গে আর কখনও পরিচয় করা হয়নি বিশ্বনাথ ও সুমিত্রার। কিন্তু সন্তানের সঙ্গে এরকম কিছু তারা একদমই চাননি। দুই পুত্র সন্তানের সঙ্গে কন্যা দিশাও যাতে সমান ভাবে শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পান তার চেষ্টা করে গিয়েছে তপশিলি জাতির এই পরিবার।

    বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে দিশা। মথুরাপুর কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুল থেকে মোট ৭০০ এর মধ্যে ৬১৩ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছে সে। অঙ্ক ছাড়া সাতটি বিষয়ের মধ্যে প্রতিটি বিষয়ে লেটার মার্কস পেয়েছে দিশা। বাংলায় সে পেয়েছে ৯৪, ইংরেজিতে ৮০, অঙ্কে ৭৭, পদার্থ বিজ্ঞানে ৯০, জীবন বিজ্ঞানে ৮৫, ইতিহাসে ৯৪ এবং ভূগোলে ৯৩। দিশার দুই বড় দুই ভাই ঐ কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দিশাও ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চায় সে।

    অ্যাসবেসটাসের ছাউনির ঘরে দিশাদের ছোট্ট সংসার। সেই ঘরে বসেই দিশা বলল, ‘যে কোনও মূল্যে আমাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে আগামী দিনে আরও ভালো ফলাফল করার ইচ্ছে আছে।’ কিন্তু এই সাফল্যের পথে একমাত্র বাধা আর্থিক সমস্যা। তাই দিশার আর্জি, ‘কোনও সহৃদয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি আমার পড়াশোনার খরচ চালানোর দায়িত্ব নেন, আমি চির কৃতজ্ঞ থাকব। (যোগাযোগের নম্বর: 9064166114)।’

    কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতিও দিশার প্রশংসা করেন। বলেন, ‘ওই ছাত্রীটি কঠোর পরিশ্রম করে এই সাফল্য এনেছে। আগামী দিনে ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। আমরাও সাধ্যমত ওর পাশে বিগত দিনে দাঁড়িয়েছি।’

  • Link to this news (এই সময়)