আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইলিশ মাছের সঙ্গে এবার ফরাক্কা ব্যারেজে গঙ্গা নদীর 'আপস্ট্রিম'-এ গলদা চিংড়ি মাছের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নিল কেন্দ্র সরকারের মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র আইসিএআর-সিফরি ( ICAR- CIFRI)।
কেন্দ্রের 'নমামি গঙ্গে' প্রকল্পের অংশ হিসেবে গঙ্গা নদীর 'বায়ো ডাইভার্সিটি' বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে শুক্রবার ফরাক্কা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় গঙ্গা নদীতে প্রায় আড়াই লক্ষ গলদা চিংড়ির চারাপোনা ছাড়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার ডিরেক্টর ডঃ বসন্তকুমার দাস, বিজ্ঞানী শ্রীমতি নিরুপদা চানু এবং নমামী গঙ্গে প্রকল্প ও সিফরি-র গবেষণারত একাধিক বৈজ্ঞানিক এবং আধিকারিক। এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত আধিকারিকরা জানান, ইলিশ মাছের মতো গলদা চিংড়ির পরিযায়ী স্বভাব রয়েছে। ফরাক্কা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকার এবং গঙ্গা নদীর আপস্ট্রিমে ইলিশ মাছের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে এর আগে এক লক্ষ ইলিশ মাছের চারা ছাড়া হয়েছে।
জাতীয় রেঞ্চিং কর্মসূচির ডিরেক্টর ডঃ বসন্তকুমার দাস বলেন,' ইলিশের মতো গলদা চিংড়িও পরিযায়ী মাছ। তবে গঙ্গার আপস্ট্রিমে এই মাছ খুব একটা দেখা যায় না। পশ্চিমবঙ্গের বাজারে এই বড় আকারের গলদা চিংড়ি ৬০০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।' তিনি জানান, 'গঙ্গা নদীর আপস্ট্রিমে গলদা চিংড়ির সংখ্যা বাড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে এদিন প্রায় আড়াই লক্ষ বড় আকারের গলদা চিংড়ির চারাপোনা নদীতে ছাড়া হয়েছে। এই মাছ আকারে একটু বড় হলে মৎস্যজীবীরা তা ধরতে পারবেন এবং বাজারে বিক্রি করে তাদের ভাল মুনাফা হবে। এই মাছ গঙ্গা নদীতে 'ব্রিডিং' করছে কি না তা 'রিটার্ন মাইগ্রেশন'-এর সময় আমরা বুঝতে পারব। তবে তার জন্য তিন-চার মাস সময় লাগবে। সেই সময় মৎস্যজীবীরা যে গলদা চিংড়ি ধরবেন তাঁদের থেকে তথ্য নিয়ে এই বিষয়ে বিস্তারিত সমীক্ষা করা হবে।' দপ্তরের আধিকারিকেরা বলেন, অল্প সময়ে গঙ্গা নদী থেকে বেশি মাছ ধরতে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক সময় মৎস্যজীবীরা বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করে জলের ভারসাম্য নষ্ট এবং জলজ প্রাণীদের ক্ষতি করছেন। এর ফলে ফরাক্কা এবং সংলগ্ন এলাকার মৎস্যজীবীদের জালে দিন দিন মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
গঙ্গা নদীর 'বায়ো ডাইভার্সিটি' রক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ বাঙালির পাতে ইলিশ এবং গলদা চিংড়ির কোনও অভাব না হয় সেই লক্ষ্যেই হ্যাচারির মাধ্যমে 'ব্রিডিং' করার পর গলদা চিংড়ির চারাপোনা আজ নদীতে ছাড়া হল।