• এক দশক পর খুলল মিরিকের পানিঘাটা চা বাগান, কাজ ফিরে পাওয়ায় খুশি শ্রমিকরা
    প্রতিদিন | ০৩ মে ২০২৫
  • অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: এক দশক পর খুলে গেল পানিঘাটা চা বাগান। পাহাড় যেতে মিরিক মহকুমার অন্তর্গত এই বাগান গত ২০১৫ সালে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর উত্তরবঙ্গের নদী দিয়ে বহু জল গড়িয়ে গেলেও এই বাগান আর খুলছিল না। বাগানটিকে নিয়ে বেশ কয়েকবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকও হয়েছে। বাগান খোলা হবে, শেষমেশ ২৯ এপ্রিল এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সেই মতো আজ শুক্রবার বাগানটিকে খোলা হল। এদিন থেকে কাজও শুরু হয়ে গেল বাগানে। বাগানে কাজ ফিরে পাওয়ায় খুশি শ্রমিকরা। বাগানের মালিক শিবশঙ্কর বাগারিয়া বলেন, “বাগান খুলল। কিন্তু কিছু সময় লাগবে পুরোটা নতুন করে তৈরি করতে।”

    প্রায় দেড় হাজার একর এলাকা জুড়ে ওই বাগান রয়েছে। বাগানে কাজ করেন কমপক্ষে এক হাজার শ্রমিক। ২০১৫ সালে পুজোর আগে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষ চূড়ান্ত আকার নিয়েছিল। অভিযোগ, বোনাস না দিয়ে বাগানটি বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। বাগানের গেটে নোটিশ ঝুলিয়ে তালা মেরে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। সেই ঘটনায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল শ্রমিকদের। তাঁরা বছরখানেক অপেক্ষা করার পরেও যখন বাগান খোলেনি। ফলে বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের অনেকেই অন্য পেশায় চলে যেতে থাকেন। কেউ অন্য বাগানে কাজ শুরু করেন। ক্বেউ আবার নদীর পাড়ে বালি তোলার কাজ করেন।

    এই অবস্থায় শ্রমিকপক্ষ হঠাৎ ২০২০ সালে কাঁচাপাতা তুলে বিক্রি করা শুরু করেছিলেন। তখন আবার মালিকপক্ষ আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে সেই পাতা তোলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই বেশ কয়েকবার বাগান বিষয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত থাকতেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বাগান খোলার পর তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার সব বন্ধ বাগান খুলতে তৎপর। শুধু তাই নয়, কেন্দ্র যে বাগানে পিএফের টাকা দিচ্ছে না, সেদিকেও আমাদের নজর রয়েছে। আমরা প্রতিটি বন্ধ বাগান দ্রুত খুলব। তা নিয়ে আমাদের বৈঠকও চলছে। ১০ বছর পর এই বাগান খুলে যাওয়ায় আমরা খুশি। রাজ্য সরকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ।” অন্যদিকে বাগান মালিক শিবশঙ্কর বাগারিয়া বলেন, “আমি বৃহস্পতিবার শহরে এসেছি। এদিন থেকে বাগান খুলে দিলাম। তবে বন্ধ থাকায় ম্যানেজার কোয়ার্টার-সহ কারখানা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আসবাবপত্র সব চুরি হয়ে গিয়েছে। তাই বাগান আবার পুরনো অবস্থায় নিয়ে যেতে কিছু সময় লাগবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)