• বিধ্বংসী আগুন গিলেছিল বইখাতা-অ্যাডমিটের সঙ্গে জন্মদাতা পিতাকেও, কেমন রেজাল্ট রেনুইয়ার?
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • কোনও বোর্ড নয়, এ যেন জীবনই পরীক্ষা নিচ্ছিল রেনুইয়া খাতুনের। মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক এক সপ্তাহ আগে বিধ্বংসী আগুন গিলে নিয়েছিল মাথার ছাদ, বই খাতা এমনকী প্রিয়জনকেও।

    বাগানের হাল্লান হাই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রেনুইয়া খাতুনের বাড়ি। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছিল রেনুইয়ার বই খাতা থেকে অ্যাডমিট কার্ডও। তবুও এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়াশোনা ছাড়েনি রেনুইয়া। পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার আগেই অগ্নিদগ্ধ বাবার মৃত্যুর খবরও এসেছিল তার কানে। তবুও হার মানেননি রেনুইয়া। সেই লড়াইয়েরই ফলাফল এল এদিন। মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ রেনুইয়া খাতুন।

    প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে লড়ে মাধ্যমিকে ২৩১ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন রেনুইয়া। আগামী দিনে আরও পড়ার ইচ্ছে থাকলেও বাধ সাধছে পরিস্থিতি। অভাবের সংসারে পড়াশোনা এখন বিলাসিতা বলছেন আত্মীয়রা। যদিও রেনুইয়ার মা রেহানা খাতুন জানান পাড়া-প্রতিবেশী, গ্রামের মানুষ তাদের পাশে রয়েছেন। তাদেরকেই সম্বল করে তারা এগিয়ে যাবে। মেয়েকে পড়াশোনাও করাবে।

    প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ফেব্রুয়ারি শর্ট সার্কিটের কারনে রেনুইয়াদের বাড়িতে আগুন লেগে যায়। বাড়িতে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে গোটা বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। ঘটনায় রেনুইয়ার বাবা রিয়াজুল আলম-সহ তিনজন আহত হন। বাবা এবং কাকাকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রথম। তারপর তাদের স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় রেনুইয়ার বাবা রিয়াজুল আলম মারা যান।

    ঘটনাক্রমে সেদিন থেকেই শুরু হয় মাধ্যমিক। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে যাবার সময় বাবার মৃত্যুর কানাঘুষো খবর তার কানে আসে। যদিও পরিবারের লোক সেটা চেপে রাখার চেষ্টা করলেও কিছুটা হলেও সে তা বুঝতে পারে। এই অবস্থাতেও সে অন্যান্য পরীক্ষা দেয়। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও সে পরীক্ষা দিয়েছিল এবং পাসও করে। তার সাফল্যে সে নিজে এবং পরিবারের সকলের রীতিমতো খুশি। খুশি পাড়া প্রতিবেশীরাও।

  • Link to this news (এই সময়)