নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: মিষ্টি ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় ফের উত্তেজনা ছড়াল বাড়িভাসার মাদানিবাজারে। বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীর মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়দের একাংশ। অভিযোগ, খুনে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে তার বাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। পাল্টা পুলিস লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। যারজেরে এলাকা কার্যত বনধের চেহারা নেয়। ভাঙচুরের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার(পূর্ব) রাকেশ শর্মা বলেন, ওই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। ঘটনাটি নিয়ে একটি নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে, পুলিস লার্ঠি চার্জ করেনি। বাড়ি ভাঙচুরের প্রতিরোধ করেছে।
দু’দিন আগে এনজেপি থানার মাদানিবাজারে খুন হন মিষ্টি ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ দাস(৪৯)। পাড়ার শিশুদের মারধরের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক যুবক তাঁকে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে ওই ব্যবসায়ীর মৃতদেহ পরিবারের লোকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মৃতদেহ নিয়ে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে চড়াও হন মৃত ব্যবসায়ীর আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের একাংশ। তাঁরা অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখান। ক্ষোভ এতটাই ছিল, আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। মোটর সাইকেল, বাড়ির গেট, ঘরের জানালার একাংশ ভেঙে দেওয়া হয়। পুলিস তাতে বাধা দিলে তাদের উপরই হামলা চালানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। তখন পুলিস বেপড়োয়াভাবে লাঠি চার্জ করে বলে অভিযোগ। পুলিস ঘটনাস্থল থেকে মনোজ রায় নামে এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা মৃতদেহ নিয়ে চলে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নীরিহ ওই মিষ্টি ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীকে পুলিস এখনও গ্রেপ্তার করেনি। তাই অভিযুক্তের গ্রেপ্তারের দাবিতে সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হলেও ভাঙচুর করা হয়নি। পুলিস আন্দোলনকারীদের উপর অন্যায়ভাবে লাঠি চালিয়েছে।
ওই ঘটনার পর থেকেই এলাকার পরিবেশ থমথমে। শুক্রবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে পুরুষদের তেমন দেখা পাওয়া যায়নি। স্থানীয় অধিকাংশ দোকান ছিল বন্ধ। এলাকার রাস্তা দিয়ে পুলিস ভ্যান কয়েকবার টহল দিয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই খুনের ঘটনা নিয়ে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। গণধোলাইয়ের জেরে অভিযুক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শীঘ্রই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হবে। তা সত্ত্বেও কিছু লোক আইন হাতে তুলে নিয়েছিল। তাঁদের প্রতিরোধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ওই বাজারে কয়েকজন শিশুকে বিনাকারণে বিক্রম দাস নামে স্থানীয় ওই যুবক মারধর করছিল বলে অভিযোগ। এনিয়ে মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রতিবাদ জানান। সেই রোষেই তাঁর সঙ্গে ঝামেলায় জড়ায় বিক্রম। এক-দু’কথায় উত্তেজিত হয়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে খুন করে বিক্রম। সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। সেই সময় অভিযুক্তকে ধরে স্থানীয়রা বেধড়ক পেটান বলে অভিযোগ। পুলিস বিক্রমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।