পড়ার ফাঁকে গোয়েন্দা গল্পে ডুবে থাকে মাধ্যমিকে প্রথম আদৃত
বর্তমান | ০৩ মে ২০২৫
নির্মাল্য সেনগুপ্ত, রায়গঞ্জ: ‘ফেলুদা’ তার প্রিয় চরিত্র। বইয়ের পাশাপাশি গোয়েন্দা গল্পে মশগুল থাকা রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের সেই আদৃত সরকারই এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯৯.৪৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে রাজ্যের সেরা। তার প্রাপ্তনম্বর ৬৯৬। ধারাবাহিকভাবে পড়াশোনা ভালো করলেও গোয়েন্দার মতো শেষমুহূর্তে সকলকে চমকে দিয়েছে রাজ্যের সেরার তালিকায় এক নম্বরে উঠে আসা আদৃত। শুক্রবার সকালে ফলপ্রকাশের পর থেকে খুশির জোয়ার আদৃতের পরিবারে। আদৃতকে ঘিরে দিনভর হৈ হুল্লোড় রায়গঞ্জে। শুভেচ্ছা জানাতে শহরের বীরনগরে তার বাড়িতে ভিড় জমালেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে আত্মীয় পরিজন, প্রতিবেশী, রায়গঞ্জ পুরসভা, বিভিন্ন সংগঠন, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। স্কুলে মার্কশিট আনতে গেলে সহপাঠীরা তাকে কাঁধে তুলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা তাঁর দপ্তরে ডেকে পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
রায়গঞ্জ শহরের ২৩ ওয়ার্ডের বীরনগর এলাকার বাসিন্দা আদৃত। বাবা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী অমিতকুমার সরকার ও গৃহবধূ মা সীমা সরকার দুজনেই বাড়ির ছোট ছেলের এই সাফল্যে আত্মহারা। তাঁদের বক্তব্য, আদৃত ছোট থেকেই বই নিয়ে ব্যস্ত। বরাবর সকাল সন্ধে পড়তে বসতো। স্কুল, কোচিং সেন্টারে যাওয়া বাদে বাকি সময় সকাল সন্ধ্যায় পড়তে বসতো। বইয়ের পাশাপাশি গল্পের বই পড়তে ও ভালোবাসে। আদৃতর একমাত্র দিদি অর্পিতা সরকার বলেন, ভাইয়ের সত্যজিৎ রায়ের লেখা গোয়েন্দা গল্প ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা নানা গল্প প্রিয়। ফেলুদা তার প্রিয় গোয়েন্দা চরিত্র। বর্তমানে ব্যোমকেশ পড়া শুরু করেছে।
এদিকে আদৃতর চমকপ্রদ এই ফল নিয়ে বেজায় খুশি করোনেশন হাইস্কুলের শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কালীচরণ সাহা বলেন, কঠোর পরিশ্রম, অধ্যাবসায় আদৃতর সাফল্যের চাবিকাঠি। আদৃত বাংলা, ইংরাজি, অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান, ইতিহাসে একশোয় একশো পেয়েছে। জীবন বিজ্ঞানে ৯৮ ও ভূগোলে ৯৮ নম্বর পেয়েছে। আমাদের স্কুল থেকে কৌস্তভ সরকার ৬৮৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মেধাতালিকায় দশম স্থান পেয়েছে। আদৃতর বক্তব্য, বড় হয়ে একজন চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা আমার। তার জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছি। ভালো ফলের পিছনে রসায়ন ছিল দৈনিক স্কুলে হাজির থেকে শিক্ষকদের পরামর্শ নেওয়া। আমার চেষ্টা থাকতো স্কুলে দৈনিক উপস্থিত হয়ে স্কুলের গাইডলাইন অনুযায়ী চলা। তাঁর কথায় ১০ জন প্রাইভেট টিউটর ছিল। যাঁদের পরামর্শ আমি পেয়েছি।