দেবজ্যোতি সাহা, তুফানগঞ্জ: এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় জোড়া সাফল্য তুফানগঞ্জ নৃপেন্দ্র নারায়ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের। এই স্কুল থেকে মেধা তালিকায় সম্ভাব্য অষ্টম স্থান অধিকার করেছে তুফানগঞ্জ শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দরিয়াবলাই বাই লেনের বাসিন্দা অনির্বাণ দেবনাথ। অন্যদিকে, ১ নম্বর কম পেয়ে সম্ভাব্য নবম স্থান অধিকার করেছে শহরেরই ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফুল্ল সরণির বাসিন্দা দেবাঙ্কন দাস। অনির্বাণের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। দুই কৃতীই বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। স্কুলের দুই পড়ুয়ার নজরকাড়া সাফল্যে খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ তাদের সহপাঠীরা। অনির্বাণ বাংলায় ৯৬, ইংরেজি, জীবনবিজ্ঞান ও ভূগোলে ৯৯ নম্বর করে, অঙ্কে ৯৭, পদার্থবিদ্যায় ১০০ এবং ইতিহাসে ৯৮ নম্বর পেয়েছে। ওর বাবা অজয় দেবনাথ ছাটা রামপুর হাইস্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। মা মণিকা দেবনাথ গৃহবধূ। স্কুলে বরাবরই সে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানের মধ্যে থাকত। অনির্বাণের প্ৰিয় বিষয় অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা। ক্রিকেট খেলা ও সুইমিংয়ের প্রতি আলাদা ঝোঁক রয়েছে তার। দিনে কিছুটা সময় মোবাইল ব্যবহার করলেও তা ছিল শুধুমাত্র পড়াশোনার বিষয়গুলি ঝালিয়ে নিতে।
অনির্বাণ বলে, দিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পরীক্ষার আগে পড়াশোনা করেছি। পাঁচজন গৃহশিক্ষক ছিল আমার। পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাবা, স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা সবসময়ই গাইড করতেন। তাঁদের প্রত্যেকের সাহায্য ছাড়া এই ফল সম্ভব ছিল না। ইচ্ছে আছে, আগামী দিনে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ব।
অন্যদিকে, মেধা তালিকায় নবম স্থান অধিকার করেছে প্রফুল্ল সরণির বাসিন্দা দেবাঙ্কন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭। দেবাঙ্কন বাংলায় ৯৪, ইংরেজি ও ইতিহাসে ৯৮ করে, অঙ্কে ১০০, পদার্থবিদ্যা, জীবনবিজ্ঞান ও ভূগোলে ৯৯ করে নম্বর পেয়েছে। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তার। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলা, হিন্দি গান শুনতে ভালোবাসে সে। দেবাঙ্কন বলেন, বছর ছ’য়েক আগে দুর্ঘটনায় বাবা মারা যান। তারপর থেকে মা আমার একমাত্র অভিভাবক। আটজন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়েছি। তবে কখনও বাধাধরা নিয়ম করে পড়াশোনা করিনি। যখন মন চাইত তখনই পড়তাম। আশা ছিল, ভালো রেজাল্ট হবে। তবে মেধা তালিকায় আমার নাম থাকবে তা ভাবতে পারিনি।
দুই পড়ুয়া কৃতিত্বে খুশি স্কুল। তুফানগঞ্জ নৃপেন্দ্র নারায়ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রামকৃষ্ণ প্রামাণিক বলেন, আমাদের স্কুল থেকে মেধাতালিকায় অষ্টম ও নবম স্থান অধিকার করেছে দুই ছাত্র। ওদের সাফল্যে আমরা গর্বিত। ওরা অন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওদের মেধা আগামী দিনে ওদের লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।