উজ্জ্বল পাল, বিষ্ণুপুর: ফের মাধ্যমিকে বাঁকুড়ার জয়জয়কার। এই জেলার ১১জন মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় স্থান দখল করেছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করে চমক দিয়েছে বিষ্ণুপুর মহকুমার সৌম্য পাল ও ঈশানী চক্রবর্তী। সকাল থেকেই টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিল তারা। নাম ঘোষণা হতেই তাদের পরিবারে দেখা যায় উচ্ছ্বাস। চলে মিষ্টিমুখ। শুভেচ্ছার বন্যায় তারা ভাসতে থাকে। ভিডিও কলে শুভেচ্ছা জানান বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন। বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ তাদের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাপত্র তুলে দেন। তিনি বলেন, কঠোর অধ্যাবসায়ের জেরেই কৃতীরা সফল হয়েছে।
বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ছাত্র সৌম্য রাজ্যে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় হয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪। সে বাংলা, অঙ্ক, জীবন বিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০ নম্বরই পেয়েছে। ইংরেজি ও ইতিহাসে ৯৭ নম্বর করে পেয়েছে। আইআইটিতে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে সে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। বিষ্ণুপুর শহরের শ্যামরাই বাজারে সৌম্যদের বাড়ি। তার দুই দিদি রয়েছে। বাবা বংশীধর পাল দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি কারখানায় কাজ করেন। মা রুপালি পাল গৃহবধূ। বংশীধরবাবু বাইরে থাকায় বেশিরভাগ সময় সৌম্যকে গাইড করেছেন রুপালিদেবী। ছেলের সাফল্যে তাঁরা ভীষণ খুশি। আত্মীয় পরিজন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারাও খুশি হয়েছেন। সৌম্য আপাতত নিজের বিদ্যালয়েই উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হবে। সে বলে, পড়াশোনার বাঁধাধরা নিয়ম ছিল না। যখনই ভালো লাগত তখনই পড়েছি। পাঠ্যবই গুরুত্ব সহকারে পড়েছি। প্রথম দশে থাকব ভেবেছিলাম। তবে দ্বিতীয় হব ভাবিনি। গান শোনা আমার শখ। অবসর সময়ে নিজেও রবীন্দ্র সঙ্গীত গাই। ভবিষ্যতে আমি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে আইআইটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাই।
এছাড়া মাধ্যমিকে তৃতীয় এবং মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছে কোতুলপুরের ঈশানী। সে ভবিষ্যতে পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে চায়। কোতুলপুর সরোজবাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ঈশানী সচ্ছল পরিবারের সন্তান হলেও নিজের অধ্যাবসায় এবং পড়াশোনার ধারাবাহিকতাকেই সাফল্যের চাবিকাঠি বলে মনে করছেন।
ঈশানীর বাবা হীরালাল চক্রবর্তী এবং মা সোনালি মণ্ডল কোতুলপুর হাইস্কুলের অঙ্কের শিক্ষক ও শিক্ষিকা। তাঁদের গাইডেন্সেই এসেছে সাফল্য। ঈশানির প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩। সে বাংলা, ইতিহাস ও জীবনবিজ্ঞানে ১০০ পেয়েছে। অঙ্ক ও ভূগোলে ৯৯ করে, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৮ এবং ইংরেজিতে ৯৭ পেয়েছে। ঈশানি বলে, পড়াশোনাকে বোঝা ভাবা চলবে না। ভালোবেসে পড়লে সাফল্য ঠিক আসবেই। আমি প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে পড়াশোনা করেছি। কখনও ফাঁকি দিইনি। পাঠ্য বই খুঁটিয়ে পড়েছি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় একটি রাজ্য ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় আমি ২৫তম র্যাঙ্ক করেছিলাম। তাতে আমার উৎসাহ দ্বিগুণ হয়েছিল। আমি পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করে দেশ ও সমাজের কাজে অংশীদার হতে চাই।