• জেলার প্রথম দশের মধ্যে ১১ জন আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলের
    বর্তমান | ০৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: মাধ্যমিকের ৬৬ জনের মেধা তালিকায় ঠাঁই হয়নি পশ্চিম বর্ধমানের কোনও পড়ুয়ার। রাজ্যের সামগ্রিক পাশের হার যেখানে ৮৬.৫৬ শতাংশ, সেখানে জেলায় পাশের হার ৭৩.৮৭ শতাংশ। শিক্ষায় কি ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে জেলা! এই চর্চার মধ্যেই ব্যতিক্রমী চিত্র আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে জেলার সেরা দশের যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, সেখানে ১৮ জন পড়ুয়ার মধ্যে ১১ জনই আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের ছাত্র। 

    ১৯৩৯ সাল থেকে এই স্কুলের পথচলা শুরু। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধীনে থাকা এই হাইস্কুল মাধ্যমিকে শিল্পাঞ্চলে ধারাবাহিক সাফল্য‌ এ঩নে দিয়েছে। এই স্কুলের বহু পড়ুয়া আজ খ্যাতনামা চিকিৎসক, বিজ্ঞানী। দশকের পর দশক ধরে সমাজ গড়ার কাজে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া এই স্কুলে পড়ুয়াদের ভর্তি করাতে ভিন জেলা থেকেও অভিভাবকরা ছুটে আসেন। মেধা তালিকায় স্কুলের কেউ ঠাই না পেলেও সামগ্রিক ফলাফলের বিচারে এক কথায় অসামান্য সাফল্য এসেছে।

    এবার স্কুল থেকে মাধ্যমিকে বসেছিল ৯২ জন। তারমধ্যে ৯১ জনই ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। ৭৫ শতাংশের বেশি নম্বর অর্থাৎ স্টার পেয়েছে ৮৪ জন, ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে ৩৬ জন। ৬৫০-এর বেশি নম্বর পেয়েছে ১৮ জন। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের পড়ুয়া অভ্র রায় জেলায় প্রথম হয়েছে। তার প্রাপ্য নম্বর ৬৮৪। পরিবার থাকে বর্ধমানে। সে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। একই নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছে সৌমিক দে। আসানসোল মহিশীলা কলোনির বাসিন্দা সৌমিকের বাবা কাজলকৃষ্ণ দে বিবি কলেজের ফিজিক্সের অধ্যাপক। সৌমিকও বড় হয়ে ফিজিক্স নিয়ে পড়তে চায়। একই স্কুলের পড়ুয়া আসানসোল কেএসটিপি কলোনির ধ্রবজ্যোতি হাজরা জেলায় দ্বিতীয়। তার প্রাপ্য নম্বর ৬৮১। প্রাক্তন সেনাকর্মী বাবা রামকৃষ্ণ হাজরার দাবি, স্কুলের শৃঙ্খলা অতুলনীয়। সম্ভবত জেলার মহিলাদের প্রথম সুহানা লাহা। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮০। সে মানকর গালর্স হাইস্কুলের পড়ুয়া। জেলার চতুর্থ ও আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের তৃতীয় আর্য ঘোষের প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৯। জেলার পঞ্চম ও স্কুলের যুগ্ম চতুর্থ রাজদীপ পাত্র ও নীলার্ঘ্য সাধুখাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৮। দুর্গাপুরের আরই কলেজ মডেল স্কুলের জাগৃতী অধিকারীও একই নম্বর পেয়েছে। স্কুলের পঞ্চম ও জেলার ষষ্ঠ রুদ্রনীল চক্রবর্তীর প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৭। একই নম্বর পেয়েছে দুর্গাপুরের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পাবলিক স্কুলের প্রিতম মণ্ডল। এছাড়াও আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুল থেকে একজন পড়ুয়া জেলায় নবম হয়েছে। ওই স্কুল থেকেই জেলার আরও তিন পড়ুয়া জেলায় দশ নম্বর স্থান দখল করেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী ভারূপানন্দ বলেন, পড়ুয়াদের আগামী জীবনের সাফল্য কামনা করি। জেলার মেধা তালিকায় একজন করে পড়ুয়া ঠাই পেয়েছে ধাদকা এনসি লাহিড়ি হাইস্কুল, নতুনডাঙা হাইস্কুল ও সরেন্দ্রচন্দ্র মর্ডেল হাইস্কুল থেকে। 

    পশ্চিম বর্ধমানের কোনও পড়ুয়ার রাজ্য মেধা তালিকায় ঠাঁই না পাওয়া নিয়ে জেলার বিশিষ্ট চিকিৎসক সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, আসানসোল-দুর্গাপুরের বহু পড়ুয়াই মাধ্যমিকের আগে থেকেই ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইআইটির এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে দেয়। 
  • Link to this news (বর্তমান)