• আরমবাগে চার পড়ুয়া মেধা তালিকায়
    বর্তমান | ০৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: মাধ্যমিকে রাজ্যের মেধা তালিকায় আরামবাগ মহকুমা থেকে চার কৃতী জায়গা করে নিয়েছে। তাতেই খুশির হাওয়া শিক্ষা মহলে। কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন বহুমুখী বিদ্যালয় থেকে দুই ছাত্র চৌধুরী মহম্মদ আসিফ ও অয়ন নাগ যথাক্রমে পঞ্চম এবং নবম স্থান করে নিয়েছে। এছাড়া আরামবাগের গৌরহাটি হরদাস ইনস্টিটিউশনের ছাত্র সিঞ্চন নন্দীও যুগ্মভাবে পঞ্চম হয়েছে। অন্যদিকে, পুরশুড়ার চিলাডাঙ্গি রবীন্দ্র বিদ্যাবীথির ছাত্রী আয়ন্তিকা সামন্ত রাজ্যের মেধা তালিকায় দশম স্থানে এসেছে। গোঘাটের কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন বহুমুখী বিদ্যালয়ে বরাবরই মাধ্যমিকে সফলতা এসেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেখানকার ছাত্র চৌধুরী মহম্মদ আসিফ ৬৯১ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম হয়েছে। তার বাড়ি গোঘাটের আমাডোবা গ্রামে। সে পঞ্চম শ্রেণী থেকেই মিশনের স্কুলে পড়ছে। সেজন্য সে হস্টেলে থাকত। তার বাবা চৌধুরী আব্দুল মান্নান পেশায় প্রাইভেট টিউটর। মা আয়েশা খাতুন গৃহবধূ। তার বিষয়ভিত্তিক নম্বরগুলি হল বাংলায় ৯৫ ইংরেজিতে ৯৯ গণিতে ১০০ পদার্থ বিজ্ঞানে ১০০ জীবন বিজ্ঞানে ৯৯ ইতিহাসে ১০০ ও ভূগোলে ৯৮। আসিফ বলে, পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মানুবর্তিতা, ঐক্যবদ্ধতা শেখার জন্যই এই স্কুলে ভর্তি হই। শিক্ষকদের কাছ থেকে সেভাবেই গাইডেন্স পেয়ে ভালো ফল হয়েছে। বড় হয়ে মানুষ হতে চাই। সকলের জন্য কিছু করতে চাই। বড় হয়ে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং দুই বিভাগের প্রস্তুতিই নেব। তবে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছেকে এগিয়ে রাখছি। ওই স্কুলেরই ছাত্র অয়ন নাগ গোঘাটের ময়রাপাড়ার বাসিন্দা। সে ৬৮৭ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মেধা তালিকায় নবম স্থান অধিকার করেছে। তার বাবা কৃপাসিন্ধু নাথ পেশায় মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী। মা সুলেখাদেবী গৃহবধূ। তার প্ৰিয় বিষয় গণিত। পড়াশোনার ফাঁকে তার ক্রিকেট খেলতে ভালো লাগে। তার বিষয় ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বরগুলি হল বাংলায় ৯৮, ইংরেজিতে ৯৫, গণিতে ১০০, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৮, জীবন বিজ্ঞানেও ৯৮ ভূগোলে ১০০, ইতিহাসে ৯৮। অয়ন জানিয়েছে, সাধারণত সকালের দিকেই বাড়িতে পড়তাম। এখন পড়লে জীবনের বাকি সময় ভালোভাবে কাটাতে পারব। মহারাজদের এমন শিক্ষাকেই বারবার মনে করতাম। সেইভাবেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন বহুমুখী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী কল্যাণেশানন্দজি মহারাজ বলেন, অধ্যাবসায় ও একাগ্রতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। তাই এখানে প্রত্যেকদিন ছাত্রদের মেডিটেশন করানো হয়। শিক্ষকরাও গাইড করেন পড়ুয়াদের। তারসঙ্গে ঠাকুর, মা ও স্বামীজীর কাছে প্রার্থনা করি। অন্যদিকে, গৌরহাটি হরদাস ইনস্টিটিউশনের ছাত্র সিঞ্চন নন্দীও ৬৯১ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম হয়েছে। তার বাড়ি আরামবাগের গৌরহাটিতে। সিঞ্চনের বিষয় ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বরগুলি হল বাংলায় ৯৯, ইংরেজিতে ৯৮, গণিতে ১০০, ভৌত বিজ্ঞানে ১০০, জীবন বিজ্ঞানেও ১০০ এছাড়া ইতিহাসে ৯৮ ও ভূগোলে ৯৬। সিঞ্চনের বাবা নির্মল নন্দী পেশায় পোস্ট মাস্টার। মা মুনমুনদেবী গৃহবধূ। সিঞ্চনের যমজ দিদি সৃজাও উৎকর্ষতার সঙ্গে মাধ্যমিকে সফল হয়েছে। সিঞ্চন বলে, রাত জেগে পড়াশোনা করায় বেশি অভ্যস্ত ছিলাম। সর্বোচ্চ পরিশ্রম দেওয়ার চেষ্টা করেছি। বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।  এছাড়া পুরশুড়ার চিলাডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা আয়ন্তিকা সামন্ত ৬৮৬ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে। তার বাবা নিতাই সামন্ত পেশায় রুপোর ব্যবসায়ী। মা সাগরিকাদেবী গৃহবধূ। সে পড়াশোনার ফাঁকে গোয়েন্দা গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে। তার বিষয় ভিত্তিক নম্বরগুলি হলে বাংলায় ৯৮, ইংরেজিতে ৯৫, গণিতে ১০০, জীবন বিজ্ঞানে ৯৯, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৭, ইতিহাসে ৯৯, ভূগোলে ৯৮। আয়ন্তিকা বলে, টেক্সট বই খুঁটিয়ে পড়েছি। তারসঙ্গে টিউশনে বারবার মক টেস্ট দিয়েছি। বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চাই। 
  • Link to this news (বর্তমান)