• বৃষ্টিতে থই-থই বামনগাছিতে ফের অবরোধে বাসিন্দারা, ৫ দিনে সুরাহার আশ্বাস বিধায়কের
    বর্তমান | ০৩ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: কখনও শিট পাইলিং, আবার কখনও মাইক্রো টানেল বসিয়ে উত্তর হাওড়ার অন্যতম মূল নিকাশি নালা সংস্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে কেএমডিএ। পুরসভা অতি দ্রুত সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তারপর প্রায় দেড় মাস কেটে গিয়েছে। অথচ নিকাশির কাজে তেমন কোনও অগ্রগতি এখনও কারও চোখে পড়েনি। এদিকে, গত বুধ ও বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে ফের লিলুয়ার বি রোড ও সি রোড জলমগ্ন হয়েছে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ঢুকেছে নিকাশির নোংরা জল। জল-যন্ত্রণায় জেরবার বাসিন্দারা ফের শুক্রবার বামনগাছি মোড়ে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করেন। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে নিকাশি সমস্যার সুরাহা করা হবে বলে এদিন বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়েছেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক তথা হাওড়া পুরসভার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত গৌতম চৌধুরী। আগের মতো শালবল্লা বসিয়ে তিন ফুট গভীর নিকাশিনালা তৈরি করা হচ্ছে।

    গত মার্চ মাসে বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ভূমিধসের জেরে উত্তর হাওড়ার অন্যতম মূল নিকাশি নালাটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর কেএমডিএ নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারে জোর দেয়। প্রথমে ঠিক হয়, শিট পাইলিং করে নিকাশির কাজ হবে। কিন্তু এই কাজের সময় ফের ধ্বস নামতে পারে, এই আশঙ্কা করে বিকল্প পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বামনগাছি সি রোড থেকে ১৫০০ এমএম ডায়ামিটার ব্যাসের মাইক্রো টানেলের মাধ্যমে উত্তর হাওড়ার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল পার্শ্ববর্তী একটি অক্সিডেশন পুকুরে ফেলার কথা হয়। কিন্তু সেই কাজে বারবার বাধা আসে। গত দেড় মাস ধরে যতবারই নিকাশি সংস্কারের কাজ হয়েছে, ততবারই নিকাশির নোংরা জল ঘুরপথে ঢুকে জলমগ্ন করেছে সি রোড ও বি রোডের বিস্তীর্ণ এলাকাকে। বাসিন্দারা একাধিকবার পথে নেমে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। কিন্তু জল-যন্ত্রণা থেকে রেহাই মেলেনি এখনও। গত দু’দিনের কয়েক পশলা বৃষ্টিতে ফের জলের দখলে চলে গিয়েছে সি রোড বাজার, বালক সঙ্ঘ, বিবেকনগর, বি রোডের আমতলা, কলাবাগান এবং হরিশ কলোনি। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কালো নোংরা জল থইথই করছে। এদিন ফের বামনগাছি মোড়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। লিলুয়া থানার পুলিস ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি। এরপর আসেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। তিনি পাঁচ দিনের মধ্যে সুরাহার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা উঠে যান।

    বাসিন্দারা বলেন, দু’মাস হতে চলল, আমরা নোংরা জলের মধ্যে বাস করছি। আজ পর্যন্ত পুরসভা বা কেএমডিএ কেউই সুরাহা করতে পারল না। আর কত সহ্য করা যায়? এদিন বিধায়ক আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক কী হয়। জানা গিয়েছে, শিট পাইলিং বা মাইক্রো টানেল, কোনওভাবেই এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তাই আগের মতো শালবল্লার পাইলিং করে নিকাশিনালা তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১৩০ মিটার দীর্ঘ নালা কাটা হয়ে গিয়েছে। তিন ফুট গভীরতা রেখে নর্দমা তৈরি হবে। এই কাজের জন্য দিন পাঁচেক সময় লাগবে। উত্তর হাওড়ার বিধায়ক বলেন, ‘বাসিন্দাদের ক্ষোভ সঙ্গত। তাঁদের ভোগান্তি সহ্য করতে হচ্ছে। তবে এটা ঠিক যে, বারবার রাস্তা অবরোধ করা সমাধানের পথ নয়। আমি কেএমডিএ’র সঙ্গে কথা বলেছি। বৃষ্টি হলেও এই কাজে দেরি হবে না।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)