নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: সরকারি হাসপাতালের গায়েই বেসরকারি ফ্যাক্টরি। ভিতরে রাসায়নিক, তেল, দাহ্য পদার্থের ছড়াছড়ি। শুক্রবার দুপুরে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের অফিসপাড়ার সেই ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। একের পর প্রবল শব্দে ফাটতে থাকে ভিতরে থাকা দাহ্য পদার্থের ড্রাম। ফলে, আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা চত্বর। তবে, দমকলের ১০টি ইঞ্জিন তিনদিক থেকে কাজ শুরু করে দু’ঘণ্টার মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার জন্য ফরেন্সিক তদন্ত করবে দমকল কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষের কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। এদিন আগুন নেভানোর সময়ই ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে।
সেক্টর ফাইভে কেন্দ্রীয় আয়ুর্বেদ হাসপাতালের পাঁচিলের গায়েই রয়েছে এই ফ্যাক্টরি। পুলিস ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্যাক্টরিতে হলগ্রাম লোগো তৈরি, লেবেলিং করা এবং বার কোডের ‘অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ডেটা ক্যাপচার’ (এআইডিসি) তৈরি করা হতো। তার জন্য নানা ধরনের কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ ব্যবহার হতো। এদিন দুপুর ২টো নাগাদ আচমকা মেশিন ইউনিটে আগুন লাগে। ভিতরে তখন ৫০ জনের বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসেন। খবর পাওয়া মাত্রই দমকলের ১০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। টানা পার্কিংয়ের জেরে ইঞ্জিন ঢুকতে কিছুটা সমস্যা হয়।
ভিতরে বিস্ফোরণ দেখেই দমকল কর্মীরা বুঝতে পারেন, কেমিক্যাল মজুত রয়েছে। তার জন্য ফ্যাক্টরির তিনদিক থেকে আগুন নেভানো শুরু হয়। কিছু কেমিক্যাল বাইরে বের করা হয়। আশপাশের অফিস থেকেও জল নেওয়া হয়। প্রথমে বাইরে থেকে আগুন নেভানো হয়। তারপর দমকলকর্মীরা ভিতরে ঢোকেন। বিস্ফোরণের জেরে আগুন অনেকটা উপর পর্যন্ত উঠে। ঘটনাস্থলের পাশেই রয়েছে বহু কর্পোরেট অফিস। সেখানকার কর্মীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়ায়। আয়ুর্বেদ হাসপাতালের কর্মীরাও বাইরে বেরিয়ে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শী তথা হাসপাতালের কর্মী উৎপল হাজরা বলেন, আমাদের হাসপাতালে একশোর বেশি রোগী ছিলেন। ভিতরে ২০টি বেডে ২০ জন ভর্তিও রয়েছেন। বিস্ফোরণের সময় আমরাও আতঙ্কে ছিলাম। তবে, দমকল দ্রুত কাজ করায় আগুন হাসপাতালের দিকে ছড়ায়নি।
আগুন লাগার খবর পেয়েই রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগরের পুলিস কমিশনার মুকেশ ঘটনাস্থলে পৌঁছন। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘ভিতরে প্রচুর কেমিক্যাল মজুত ছিল। ১০টি দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনেছে। কীভাবে আগুন লাগল, জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হবে।’ সেই সঙ্গে অগ্নিনির্বাপক বিধি ভঙ্গ হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হলে বলে জানিয়েছে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র