৪৭’-এর পরও বাংলার চাঁদেরনগর ফরাসি তালুক, স্বাধীনতা এল ১৯৫০ সালের ২ মে
বর্তমান | ০৩ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: সাল ১৯৫০। জানুয়ারি পেরিয়েছে। ভারতীয় গণপরিষদ নতুন সংবিধান গ্রহণ করেছে। কিন্তু বাংলার একটি ছোট এলাকা তখনও পরাধীন। বিস্ময়কর হলেও তা সত্য। এই সত্য ঘটনা বুকে ধরে আজও পথ হাঁটে হুগলি জেলার চন্দননগর।
ভারতের সংবিধান গ্রহণ হলেও তা ফরাসি তালুকই ছিল। তারপর আরও তিনমাস লেগেছিল সাবেক চাঁদেরনগরকে ভারতীয় গণ পরিষদের অংশ হতে। তারিখ হল ২ মে ১৯৫০। সেই ‘স্বাধীনতা’ শুক্রবার ৭৫ বছরে পা দিয়েছে। এই মাইলফলক ছোঁয়ার আনন্দ এদিন চন্দননগরের আনাচ কানাচে উদযাপিত হয়েছে। গঙ্গাপাড়ের ঐতিহ্যের নগরীতে পালিত হয়েছে অন্য এক ‘স্বাধীনতা দিবস’।
শহরের প্রবীণ নাগরিক ও চন্দননগর পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘স্বাধীন দেশের অন্দরে একটি ছোট এলাকার স্বাধীনতার মুহূর্ত এসেছিল ৭৫ বছর আগে। যতদিন সভ্যতা থাকবে সেই ইতিহাস চন্দননগরকে পৃথক মর্যাদা দেবে।’ চন্দননগরের সমাজকর্মী ও পুরসভার মেয়র পারিষদ শুভজিৎ সাউ স্বাধীন চন্দননগরে জন্মেছিলেন। তিনি চন্দননগরের প্রাক্তন বিধায়কের পুত্র। বাবা প্রয়াত হয়েছেন। শুভজিৎবাবু বলেন, ‘সেই দিনের কথা বাবার কাছে শুনেছি। আজও দোসরা মে এলে শিহরণ জাগে।’
শিহরণ জাগানো ইতিহাসই বটে। যেদিন ভারত স্বাধীন হল সেদিন শুধু চন্দনগরের ব্রাহ্মণপাড়ায় উঠেছিল তেরঙ্গা। আর ফরাসি বাহিনীর কড়া চোখ নজর রেখেছিল সর্বত্র। ফরাসি পতাকাই ছিল উড্ডীন। তারপর আন্দোলন, প্রশাসনিক তৎপরতা, গণভোট কত কিছু দেখেছে বিপ্লবের ধাত্রীভূমি চন্দননগর।
শেষ পর্যন্ত ২ মে উল্লাস। উড়ল ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা। শুক্রবার সেই ধারা কথনকেই স্মরণ করেছে চন্দননগর। সকাল থেকেই সাজসাজ রব গঙ্গাপাড়ের এই নগরে। সকালে ঐতিহ্যবাহী চন্দননগর কলেজে জাতীয় পতাকা উত্তোলন। তারপর শিক্ষার্থী, শিক্ষক, নাগরিক সমাজের উদ্যোগে পদযাত্রা। বিকেলে একাধিক অনুষ্ঠান। ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউটে একটি বিশেষ আলোচনা সভা। সবমিলিয়ে ছোট বড় নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার প্রহরকে স্মরণ করেছে নাগরিকরা। স্বাধীন দেশের অন্দরে এ এক বিশেষ ‘স্বাধীনতা দিবস’। নিজস্ব চিত্র