• ক্যান্সারের নিরাময়ে গুরুত্ব প্রিভেনটিভ অঙ্কোলজিতে, সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ মহানগরে
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • এই সময়: বাংলায় প্রতি বছর গড়ে লাখ দুয়েক মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তার মধ্যে ৫০% রোগীকেই বাঁচানো সম্ভব হয় না সেরা চিকিৎসা দিয়েও। কারণ, অধিকাংশ রোগীই (প্রায় ৭০%) আসেন অনেক দেরিতে, স্টেজ–থ্রি বা ফোরে।

    অথচ একই মানের চিকিৎসা পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও ইউরোপ–আমেরিকায় ক্যান্সারের শিকার ৯০% রোগীকেই বাঁচিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। কারণ, ক্যান্সার প্রতিরোধ বা প্রিভেনটিভ অঙ্কোলজির চল সেখানে অনেক দিনের।

    কিন্তু এমন পরিষেবা বাংলা বা কলকাতায় নেই বললেই চলে। দেশেও তথৈবচ। এই পরিষেবা যে জরুরি, তা মনে করিয়ে দিয়ে সরকারি–বেসরকারি সব হাসপাতালকে প্রিভেন্টিভ অঙ্কোলজি ক্লিনিক খোলার আহ্বান জানাল ‘দ্য ক্যান্সার কেয়ার অ্যান্ড কিওর সোসাইটি অফ বেঙ্গল’।

    শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে সংগঠনের তরফে এই আহ্বান জানান ক্যান্সার শল্য–চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘পশ্চিম দুনিয়ার ধাঁচে এ দেশেও মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ক্যান্সারের এই প্রতিরোধমূলক পরিষেবা চালু হয় ১৯৯২ সালে। কিন্তু সাড়ে তিন দশক পরেও এই পরিষেবা কলকাতায় প্রায় অধরা। তাই এই বিষয়টিতে জোর দেওয়া সময়ের তাগিদেই জরুরি। ক্যান্সারের চিকিৎসা হয়, এমন সব হাসপাতালে আমরা এই আবেদন নিয়ে যোগাযোগ করছি।’ তাঁর বক্তব্য, প্রতিরোধের উপরে যদি জোর দেওয়া যায়, তা হলে শতকরা ৯০ জন ক্যান্সার রোগীকে নবজীবন দেওয়া সম্ভব এখানেও।

    সংগঠনের তরফে আর এক সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট সৌমেন দাস জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ক্যান্সার আক্রান্তদের মানসিক সাপোর্ট দেওয়ার জন্যে ক্যান্সারজয়ীদের ভূমিকার উপরে জোর দেয়, এ বার তেমন একটি প্রকল্পও তাঁরা চালু করছেন। যার পোশাকি নাম ‘ক্যান্সার নেভিগেটিং সিস্টেম’। সৌমেনের দাবি, বেসরকারি ক্ষেত্রে এমন উদ্যোগ দেশে এই প্রথম। আপাতত যাঁরা ক্যান্সার থেকে সেরে উঠেছেন, এমন রোগীদেরই নেভিগেটর হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে।

    ইতিমধ্যেই ২২ জন লেভেল–১ নেভিগেটরকে নিয়োগ করা হয়েছে। আরও ৫০ জনকে অচিরেই নিয়োগ করা হবে। মেডিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট তন্ময় মণ্ডল ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সায়ন পাল জানান, এই নেভিগেটররা সবাই আপাতত স্বেচ্ছাশ্রমে এবং পরে সাম্মানিকের বিনিময়ে ক্যান্সার আক্রান্তদের মনোবল জোগানোর পাশাপাশি চিকিৎসার সঠিক দিশা দেখিয়ে সহায়তা করবেন।

    এ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় কলামন্দির প্রেক্ষাগৃহে ‘জিন্দেগি’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় সংগঠনের তরফে। সেখানে ক্যান্সার বিষয়ে আলোচনাচক্রে অংশ নেন চিকিৎসকদের পাশাপাশি ক্যান্সারজয়ীরাও। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় জুটি সৌরেন্দ্র–সৌম্যজিৎ।

  • Link to this news (এই সময়)