• বাগরি থেকে মেছুয়া, অধরা বড়বাজারের ফায়ার স্টেশন
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • বাগরি মার্কেট থেকে মেছুয়া –– মাঝে কেটে গিয়েছে সাত সাতটি বছর। একাধিকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে। তার পরেও বড়বাজার–পোস্তা এলাকায় দমকলের অত্যাধুনিক ফায়ার স্টেশনের পরিকল্পনা বাস্তবের রূপ নেয়নি। কেন হয়নি, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে খোদ দমকল কর্তৃপক্ষ–ই।

    ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বাগরি মার্কেটে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পরে নর্থ পোর্ট থানার কাছাকাছি ফায়ার স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। জায়গা পেতে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। এর মাঝে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও ওই এলাকায় দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলা যায়নি।

    অথচ, ফায়ার স্টেশন থাকলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারত দমকল। পাশেই গঙ্গা থাকায় জলের অভাবও হতো না। কেন ওই এলাকায় ফায়ার স্টেশন তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল? নবান্নের যুক্তি, সব থেকে কাছের ফায়ার স্টেশন সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ এবং লালবাজার। নর্থ পোর্টের কাছে নতুন করে দমকল কেন্দ্র হলে সরাসরি গঙ্গা থেকে জল নেওয়া যাবে।

    তা ছাড়া ওই এলাকা দিয়ে পাইপের মাধ্যমে ঘিঞ্জি এলাকায় অনবরত জল সাপ্লাই করতেও সমস্যাও হতো না। মঙ্গলবার রাতে জোড়াসাঁকো থানা এলাকায় মেছুয়াতে যে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তাতে জলের গাড়ি পৌঁছতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের। কারণ, হোটেলের আশপাশের রাস্তাগুলি আটকানো ছিল ফল–সব্জির ঝুড়িতে।

    এমন সমস্যা বড়বাজার–পোস্তার প্রায় সব রাস্তাতেই রয়েছে। বাগরি মার্কেটের আগুনের সময়েও দেখা গিয়েছিল, কী ভাবে রাস্তা এবং বিল্ডিং–এর ‘কমন প্যাসেজ’ আটকে রাখা হয়েছিল। কয়েকমাস পরে ওই এলাকায় যমুনালাল বাজার স্ট্রিটের একটি কাপড়ের গুদামেও আগুন লাগে। গত বছরের জুন মাসে ফের বাগরি মার্কেটের উল্টো দিকে মেহতা বিল্ডিংয়ে আগুনের জেরে তীব্র যানজট হয়। প্রশ্ন উঠছে, ওই এলাকায় বারবার আগুন লাগলেও কেন দমকল কেন্দ্র তৈরি করা যায়নি?

    শুক্রবার দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘আশপাশে কয়েকটি স্টেশন রয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’ দমকলের প্রাক্তন ডিজি জগমোহনের আমলে বড়বাজারের ফায়ার স্টেশন নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এখন ওই পদে রয়েছেন আইপিএস কর্তা রণবীর কুমার। এদিন তিনি বলেন, ‘কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তা খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।’

    প্রাথমিক ভাবে পোর্ট ট্রাস্টের সঙ্গেও জমি নিয়ে কিছু কথাবার্তা এগিয়েছিল। কারণ, ওই এলাকায় ফায়ার স্টেশনের জন্য পর্যাপ্ত জমি পেতে হলে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই জমি নিতে হবে। শ্যামপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট কলকাতার ডেপুটি চেয়ারম্যান (কলকাতা ডক সিস্টেম) সম্রাট রাহী এ বিষয়ে বলেন, ‘আমার সঙ্গে জমি নিয়ে দমকলের কোনও আলোচনা হয়নি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না, তা বলতে পারব না।’

  • Link to this news (এই সময়)