• টিকিট কাউন্টারের লাইনে দাঁড়ানোর দিন শেষ, যাত্রীদের জন্য চালু হলো MUTS
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • বিশ্বদেব ভট্টাচার্য, আসানসোল

    কয়েক মিনিটের মধ্যেই এসে পড়বে ট্রেন। অথচ টিকিট কাউন্টারের সামনে বিশাল লাইন। সেই ভিড় ঠেলে কী ভাবেই বা টিকিট কাটা হবে আর কখনই বা ট্রেনে ওঠা যাবে!

    দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনার সেই অধ্যায়ের এ বার সমাপ্তি ঘটতে চলেছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বৃহস্পতিবার থেকে আসানসোল স্টেশনে সরকারি ভাবে চালু হলো ‘এমইউটিএস’ (মোবাইল আনরিজ়ার্ভড টিকিটিং সিস্টেম)। রেলের আধুনিকীকরণের সঙ্গে যাত্রীদের বাড়তি সুবিধা দিতেই এই উদ্যোগ বলে দাবি রেল দপ্তরের।

    কী এই এমইউটিএস? আসানসোল স্টেশনের চিফ ইনস্পেক্টর অফ টিকিট বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘এটা এক ধরনের যাত্রী–বান্ধর টিকিট পরিষেবা। হয়তো কোনও যাত্রী স্টেশনে পৌঁছে দেখলেন, কাউন্টারের সামনে বিশাল লাইন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই চলে আসবে ট্রেন। এ পরিস্থিতিতে তিনি কী করবেন? সেই সমস্যা দূর করতে ওই যাত্রী যে গেট দিয়ে স্টেশনে ঢুকবেন, সেখানে ধারে–কাছে থাকা টিকিট বুকিং কাউন্টারের সামনে থাকবেন টিকিট চেকার। তাঁর কাছে থাকবে একটি যন্ত্র। যাত্রী যেখানে যেতে চান, তার নির্ধারিত মূল্য দিলে চেকার তাঁকে একটি প্রিন্টেড টিকিট দেবেন। ফলে তিনি লাইনে না–দাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট ট্রেনে উঠে পড়তে পারবেন।’

    শুক্রবার আসানসোল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, প্রচুর যাত্রী টিকিট চেকারের থেকে ‘এমইউটিএস’ টিকিট কাটছেন। আসানসোল থেকে এ দিনই কলকাতায় যাচ্ছিলেন আইটি কর্মী অনিতা চট্টোপাধ্যায়। তিনি এ ভাবে টিকিট কেটে অত্যন্ত খুশি। বললেন, ‘এতে সময় বাঁচার সঙ্গে হয়রানিও কমবে। আগামী দিনে রেলের উচিত একটি অ্যাপ তৈরি করা, সাধারণ মানুষের মোবাইলে থাকবে এবং তিনি বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে টিকিট কেটে নিতে পারবেন। যেমন রিজ়ার্ভ টিকিটের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।’

    পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অধিকর্তা দীপ্তিময় দত্তের বক্তব্য, ‘এই নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীদের সময় যেমন বাঁচবে, তেমনই ভিড়ের চাপও কমবে।’ এর আগে বৈদ্যনাথধামের মেলায় জসিডিতে পরীক্ষামূলক ভাবে এই মেশিন ব্যবহার করা হয়েছিল আসানসোল ডিভিশনের পক্ষ থেকে। তা সফল হওয়ায় এ বার আসানসোল স্টেশনেও শুরু হলো এমইউটিএস। রেলকর্মীরাও স্টেশন চত্বরে যে কোনও জায়গা থেকে টিকিট দিতে পারবেন। এতে প্রচলিত বুকিং কাউন্টারের সামনে থাকা ভিড়ও কমে যাবে। পরে গুরুত্ব অনুধাবন করে অন্য স্টেশনগুলিতেও এমন ব্যবস্থা চালু করা হবে।

    যদিও রেলওয়ে কর্মী সংগঠনগুলির দাবি, টিকিট বুকিং বিভাগে কর্মী সঙ্কোচনের বিষয়টি মাথায় রেখেই এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানাচ্ছেন, তা সঠিক তথ্য নয়। যাঁর‍া মনে করছেন, এই নতুন নিয়মের ফলে মানুষ কর্মচ্যুত হবে, তাঁরা ভুল ভাবছেন। এটা আসলে রেলের আধুনিকীকরণেরই অঙ্গ।

  • Link to this news (এই সময়)