• বাবা-মা যাবজ্জীবন বন্দি, কৃতিত্ব দেখাল ছেলেরা!
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • অশীন বিশ্বাস, ব্যারাকপুর

    বাবা–মা দুজনই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ফলে ছেলের কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন পরিবার পরিজন ও পড়শিরা৷ পরিবার হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়া দুই কিশোরের ঠাঁই হয়েছিল ব্যারাকপুর রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন আশ্রমে। মিশনের হোস্টেলে থেকে পরীক্ষা দিয়ে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হলো দুই পড়ুয়া৷ তাদের সাফল্যে খুশি মিশন কর্তৃপক্ষ।

    দুই ছাত্রের একজন হুগলির খানাকুলের বাসিন্দা। অন্যজনের বাড়ি বীরভূমের মাড়গ্রামে। দু’জনেই পঞ্চম শ্রেণি থেকে ব্যারাকপুর রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের আবাসিক ছাত্র। প্রথম জন ৩৪৭ নম্বর পেয়ে বি প্লাস এবং দ্বিতীয় জন ২৬২ নম্বর পেয়ে বি গ্রেড নিয়ে পাশ করেছে। জানা গিয়েছে, গত সাত বছর ধরে ওই দুই ছাত্র ব্যারাকপুর রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছে। তাদের থাকা–খাওয়া থেকে পড়াশোনার দায়িত্ব ছিল মিশন কর্তৃপক্ষেরই উপরে। তারা যাতে মাধ্যমিকে প্রথম সুযোগেই উত্তীর্ণ হতে পারে সে দিকে বিশেষ নজরও দিয়েছিলেন মিশন কর্তৃপক্ষ।

    দুই পড়ুয়া পরীক্ষার নম্বরে নজর কাড়তে না পারলেও প্রথম সুযোগেই তারা মাধ্যমিকে সফল হওয়ায় খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই পড়ুয়ারই বাবা–মা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বর্ধমান কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। দুই শিশুর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জেল কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন ব্যারাকপুর রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন কর্তৃপক্ষের কাছে। মিশন কর্তৃপক্ষও ওই শিশুদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সাত বছর আগে দু’জনকেই মিশনের হোস্টেলে আশ্রয় দেন।

    মিশনের সম্পাদক স্বামী নিত্যরূপানন্দ মহারাজ বলেন, ‘আমাদের স্কুল থেকে ৬৮৩ নম্বর পেয়ে পাশ করা আবির সাহার রেজাল্টে আমরা যেমন খুশি, ঠিক ততটাই খুশি বাবা–মা ছাড়া প্রথম সুযোগেই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ওই দুই পড়ুয়ার সাফল্যে। প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে তারা সাফল্য এনেছে।’ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ওই দুই পড়ুয়ার একজন বাড়িতে দাদার কাছে ফিরে গিয়েছে। অন্যজন মামার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আগামী দিনে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে মিশন কর্তৃপক্ষ তাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

  • Link to this news (এই সময়)