• টিউটর ছিল না, বাবার কাছে পড়েই সাফল্য এল দীপ্তাংশুর
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • এই সময়: প্রাইভেট টিউটর রাখার সামর্থ ছিল না পরিবারের। কিন্তু পেটে বিদ্যে ছিল। তাই বাবার কাছেই মাধ্যমিকের যাবতীয় পড়াশোনা করেছিল দীপ্তাংশু। আটকে গেলে সাহায্যের জন্য অবশ্যই হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন স্কুলের শিক্ষকরা। এ ভাবে পড়াশোনা করেই দীপ্তাংশু মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬৬৯। যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের ছাত্র দীপ্তাংশুর এই রেজাল্টে উচ্ছ্বসিত তাঁর শিক্ষকরা। তবে দীপ্তাংশু তার চেয়েও বেশি আনন্দিত কারণ বাবা–মায়ের মুখটা সে রাখতে পেরেছে। কষ্টের কিছুটা দামও দিতে পেরেছে বলে।

    দীপ্তাংশুর বাবা অরিন্দম রায় পেশায় সেলসম্যান। ব্যবসাটাও তাঁরই। বিভিন্ন কারখানায় দূষণ কমায়, এমন ডিভাইস ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু এ দেশে পরিবেশ সচেতনতার অবস্থা এতটাই খারাপ যে অরিন্দমের বিক্রিবাটা প্রায় হয় না বললেই চলে। মাসে মেরেকেটে ১০ হাজার টাকা রোজগার। তাই ছেলেকে প্রাইভেট টিউটর দিতে পারেননি তিনি। পরিবারের অর্থনৈতিক ব্যাপারে দীপ্তাংশুও ওয়াকিবহাল। তাই সেও বাবার কাছেই পড়াশোনা করেছে।

    অরিন্দমও যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলেরই ছাত্র। তিনিও পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন। কিন্তু খুব অল্প বয়সে তাঁর বাবা রিটায়ার করে যাওয়ায় সংসার টানতে হয়েছে। বিজ্ঞান ছেড়ে কমার্স নিয়ে গ্র্যাজুয়েট হতে হয়েছে। উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন থাকলেও পারিবারিক অনটনের জন্য আর এগোতে পারেননি। সেই অনটন এখনও রয়েছে। তবে অরিন্দম চান না একই সমস্যায় তাঁর ছেলেকে পড়তে হোক।

    তাই রোদ, জল মাথায় নিয়ে সারাদিন সেলসম্যানের কাজ করে বাড়ি ফিরেও গভীর রাত পর্যন্ত জেগে ছেলের পড়াশোনায় সাহায্য করেছেন। তাঁর স্ত্রী সোনালী যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন তাতে। ৬৬৯ নম্বর পেয়ে দীপ্তাংশু স্বপ্ন দেখে সে জেইই মেনস দিয়ে কোনও আইআইটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার। অরিন্দম জানেন সেই স্বপ্নপূরণের খরচ অ‍নেক। কিন্তু তিনি আরও খাটতে চান। থেমে যেতে চান না এখানেই।

  • Link to this news (এই সময়)