রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে বুধবার দ্বারোদ্ঘাটনের দিন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এরপর থেকেই দলের অন্দরে লাগাতার কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে তাঁকে। বৃহস্পতিবার দিঘা থেকেই চাঁচাছোলা ভাষায় নিজের দলের নেতাদের আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছিল দিলীপকে। শুক্রবারও সকালেও তিনি বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেন। এর জেরে বুধবার থেকে দিলীপকে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে দল। দিলীপের দাবি, বিজেপি মন্দিরে মন্দিরে ভেদাভেদ করে না। এ রকমভাবে রাজনীতি করলে হিন্দুরা ভোট দেবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবারই দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন, কিন্তু বিজেপি ছাড়বেন না। পাশাপাশি তিনি বলেছিলেন, যাঁরা মমতার আঁচলের তলায় থেকে রাজনীতিতে বড় হয়ে বিজেপিতে এসে করে খাচ্ছে তাঁদের থেকে দিলীপ ঘোষ শিখবে না। দিলীপ ঘোষ জানে কীভাবে লড়াই করতে হয়। শুক্রবার সকালে তিনি প্রশ্ন তোলেন, যাঁরা হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই বলছেন তাঁরাই হিন্দু মন্দির থেকে হিন্দুদের আলাদা করতে চাইছেন কেন? তাঁর কথায়, ‘বিজেপি কি তা কখনও করতে বলেছে? কাশী বিশ্বনাথ মন্দির মোদীজী তৈরি করেছেন। কেউ বলেছে ওটা মোদীর মন্দির? আমি বলছি ওই জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে যদি কেউ মাথা নত করে তাহলে সে তৃণমূল হয়ে যাবে? মানুষকে এতো বোকা ভাবেন আপনারা?’
দিলীপের আরও দাবি, রামায়ণের রাম আর বিজেপির রাম আলাদা তা দল মনে করে না। তেমনই পুরীর জগন্নাথ আর দিঘার জগন্নাথও এক। যাঁর যেখানে ইচ্ছা হবে তিনি সেখানে গিয়ে প্রণাম করবেন। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি মন্দিরে মন্দিরে ভেদাভেদ করে না। এ রকম করলে বিজেপিকে হিন্দুরা ভোট দেবে?’
এ দিনও সমালোচকদের কড়া জবাব দিয়েছেন দিলীপ। তিনি জানিয়েছেন, এই সমালোচকরাই ১–২ লাখ টাকার জন্য তাঁর পিছনে ঘুরে বেড়াত। কেউ কেউ তাঁর বিশেষজ্ঞ, উপদেষ্টা হয়ে উঠেছিল। এখন আবার তাঁরাই জামা পাল্টে তাঁকে উপদেশ দিতে এসেছেন। তাঁরা সকলে অন্ন দাস। পাশাপাশি দিলীপ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘পারলে প্রমাণ দিন দিলীপ ঘোষ কখনও কোনওদিন কোনও তৃণমূল নেতাকে ফোন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ছেড়ে দিন। তাঁরা দরকার হলে দিলীপ ঘোষকে ফোন করেছে। কেউ বলতে পারবে না আমি কোনও অ্যাপের মাধ্যমে গোপনে ফোন করেছি বা রাতের বেলায় কালীঘাটের বাড়িতে গিয়েছি। দিলীপ ঘোষ লড়াই করেছিল। লড়াই করবে। দিলীপ ঘোষ বিজেপিটা বোঝে।’