• দিঘায় এ বার দক্ষিণেশ্বরের আদলে কালী মন্দির, ভিড় জমছে ভক্তদের
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৫
  • অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য লগ্নে দিঘায় দ্বারোদ্ঘাটন হয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের। পর্যটক থেকে শুরু করে পুণ্যার্থীদের জন্য যা বাড়তি পাওনা বলে মনে করা হচ্ছে। এ বার আরও একটি ভালো খবর পুণ্যার্থীদের জন্য। জগন্নাথ মন্দির থেকে ৪৫ কিমি দূরে ‘দক্ষিণেশ্বর মন্দির’-এর মতো তৈরি হচ্ছে কালী মন্দির। ভিড় জমছে ভক্তদের।

    জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে প্রতাপদিঘি বাজারে প্রায় সাত দশকের আগে সাধক লক্ষ্মীনারায়ণ দাস প্রথম কালীপুজো শুরু করেছিলেন। মাটির দেওয়ালের একচালা খড়ের ঘরে মাটির প্রতিমায় লক্ষ্মীনারায়ণ কালী সাধনায় ডুবে থাকতেন। সেই থেকে মন্দিরে ভক্তির টানে এলাকায় মানুষজন ছুটে আসতেন। জীবন সায়াহ্নে পৌঁছে নিজের হাতে শান্তিশ্বরী কালী আরাধনা করতে না পারায় একজন পুরোহিত নিয়োগ করেছিলেন লক্ষ্মীনারায়ণবাবু। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।

    পরে মন্দিরের দেখাশোনা করতেন স্থানীয় লোকজনেরা। ভক্তি ও আস্থার টানে মন্দিরে ক্রমেই ভিড় বাড়তে থাকে। কালীমন্দিরকে ঘিরে সর্বজনীন উৎসব শুরু হয়। মাটির জীর্ণ মন্দিরে মায়ের পুজো নিয়ে অনেকে আপত্তি তুলেন। সেই থেকে নতুন মন্দির তৈরির ভাবনা শুরু হয়। গত ২০১৭ সালে মন্দিরের ট্রাস্ট গঠন হয়। পুরোনো এই মন্দিরকে ঘিরে এলাকায় আট থেকে দশটি গ্রামের মানুষের ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে।

    ট্রাস্ট তৈরি করে ভক্ত-সহ এলাকাবাসীর আর্থিক সাহায্য ও দক্ষিণায় গত ২০১৮ সালে পুরনো মন্দির ভেঙে নতুন মন্দির শুরু হয়। দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির হিন্দু ধর্মীয় আস্থার জায়গা। প্রত্যন্ত এলাকায় সকলে দক্ষিণেশ্বর গিয়ে মন্দির দর্শনের সুযোগ বা সামর্থ্য থাকে না। সেই কথা ভেবে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের আদলে প্রতাপদিঘি বাজারে কালীমন্দির তৈরির ভাবনা।

    আট বছরের চেষ্টায় ষাট ফুট উঁচু দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে কালী মন্দির তৈরি হয়েছে। মন্দিরে মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে পাথরের শান্তিশ্বরী কালী প্রতিমা। মন্দিরে স্থান পেয়েছেন রামকৃষ্ণ ও মা সারদা। সাড়ে চারশো বর্গফুট জায়গা জুড়ে এই মন্দির তৈরি হয়েছে। ভক্তদের দান সামগ্রী দিয়ে মন্দির সজ্জিত করা হয়েছে। অক্ষয় তৃতীয়াতে মন্দিরের উদ্বোধন-সহ মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। ১৬ পন্ডিত নিয়ে হোম ষজ্ঞের মাধ্যমে পুজো শুরু হয়। মন্দির উদ্বোধন পরে ধর্মীয় সভা ও কয়েক হাজার মানুষকে অন্নভোগ বিতরণের ব্যবস্থা করেন।

    মন্দির ট্রাস্ট কমিটির সভাপতি ভার্গবেন্দ্র নাথ জানা বলেন, ‘দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সেই আবেগ থেকে অনুকরণ করে এই শান্তিশ্বরী মায়ের মন্দির তৈরি চেষ্টা করা হয়েছে। বাড়ির কাছে মানুষ দক্ষিণেশ্বর মন্দির দর্শনের সুযোগ পাবেন।’ স্থানীয় বাসিন্দা প্ৰণবেশ রায় বলেন, ‘গ্রামের বসবাসকারী মানুষজনের বিপুল অর্থ ব্যয় করে কলকাতায় গিয়ে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের প্রতিমা দর্শন করা সম্ভব নয়। গ্রামের মধ্যে সেই আদলে মন্দির গড়ে ওঠায় বেশ ভালো লাগছে।’

  • Link to this news (এই সময়)