আগামী ৫ মে মুর্শিদাবাদ সফরে মুখ্যমন্ত্রী, মমতার কাছে ‘বিশেষ’ প্যাকেজের প্রত্যাশা করছেন ওয়াকফ আঁচে আক্রান্ত মানুষেরা
আনন্দবাজার | ০৩ মে ২০২৫
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় সম্প্রতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। প্রশাসনের উদ্যোগে অশান্তি থিতিয়েছে। তার মধ্যে আগামী ৫ মার্চ মুর্শিদাবাদ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপদ্রুত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যেতে পারেন মমতা। রাজ্য প্রশাসনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফরসূচিও জানানো হয়েছে। আগামী ৫ মে সুতি বিধানসভা কেন্দ্রের ছাপঘাটি ময়দানে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করার পাশাপাশি পরের দিন শমসেরগঞ্জের হিংসা কবলিত এলাকায় যাওয়ার কথা তাঁর। এই প্রেক্ষিতে প্যাকেজের প্রত্যাশা করছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা ঘিরে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে। সভাস্থল তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে। এলাকার রাস্তাঘাটের মেরামতি চলছে। অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর সফর নিশ্চিত হওয়ার পরেই আশায় বুক বাঁধছেন ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ। বিশেষত, যে দোকানদারদের দোকানে ভাঙচুর হয়েছে, যাঁদের বাড়িঘর ভেঙেছে, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামী ৫ মে মুর্শিদাবাদ গেলেও ওই দিন তাঁর কোনও সাধারণ কর্মসূচি থাকবে না। সে দিন বহরমপুরের সার্কিট হাউসে রাত্রিবাস করবেন। পরের দিন, ৬ মে প্রথমে সড়কপথে জঙ্গিপুরের শমসেরগঞ্জে যাওয়ার কথা রয়েছে মমতার। সেখানে কয়েক’টি গ্রামে যাবেন। তার পর ধুলিয়ানে একটি কর্মসূচি রয়েছে। সেটা শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী ওই দিন দুপুর ২টো নাগাদ সুতির ছাপঘাটি ময়দানে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফরের আগে প্রশাসনের তরফে সাম্প্রতিক হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে বলে খবর। শমসেরগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আগেই বাড়ি মেরামতির জন্য টিন, পাইপ, লোহার রড এবং ১০ বস্তা করে সিমেন্ট দেওয়া হয়েছে। সরকারি সাহায্য পাওয়ার পরে অনেকেই বাড়ি, দোকান সারানোর কাজ শুরু করেছেন। তবে অনেকের কাছে ওই সাহায্য যথেষ্ট নয়। তাঁদের দাবি, আপৎকালীন সামান্য কিছু সাহায্য নয়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিচার করে সম্পূর্ণ আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ ঘোষণা করুক রাজ্য সরকার। অন্যান্য ঘটনার ক্ষেত্রে যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমার হিংসা কবলিত এলাকার বাসিন্দারা সরকারি সহায়তা আশা করছেন। দয়ারাম ঘোষ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমার মিষ্টির দোকানে লুটপাট হয়েছে, ভাঙচুর চলেছে। আনুমানিক সাড়ে তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সামান্য ১০ বস্তা সিমেন্ট আর লোহা-টিন দিয়ে আমার কী হবে?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুন। নতুন করে যাতে রুজিরুটির বন্দোবস্ত করতে পারি, সেই সহযোগিতাটুকু চাইছি। আমরা আশা করছি, জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করবেন।’’