• মেধায় উজ্জ্বল প্রান্তিক এলাকা
    আনন্দবাজার | ০৩ মে ২০২৫
  • রাজ্যে মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা হয়েছে। মেধা তালিকায় প্রথম দশজনের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে রয়েছে তিনজন পরীক্ষার্থী। দু’জন অষ্টম এবং একজন নবম স্থান দখল করেছে। তিনজনেই আগামী দিনে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণায় মনোনিবেশ করতে চায়। প্রান্তিক এলাকা বেলদা থেকে একজন অষ্টম এবং একজন নবম স্থান অধিকার করেছে। যা গত কয়েকবছরে দেখা যায়নি।

    পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের বেলদা প্রভাতী বালিকা বিদ্যাপীঠের ছাত্রী উদিতা রায় ও ঘাটালের মনসুকা লক্ষ্মী নারায়ণ হাই স্কুলের ছাত্র অরিত্র সাঁতরা মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান দখল করেছে। দু’জনের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। অন্যদিকে নারায়ণগড়ের বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি স্কুলের ছাত্র অঙ্কুশ জানা ৬৮৭ নম্বর পেয়ে নবম স্থানে রয়েছে।

    উদিতা পঞ্চম শ্রেণি থেকেই বেলদা প্রভাতী বালিকা বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা করছে। বরাবর স্কুলে প্রথম হত। বিদ্যালয় ও পরিবার তার এই ফলাফলে বেশ আনন্দিত। বেলদা প্রভাতী বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা লক্ষ্মী দাস অট্ট বলেন, ‘‘বরাবরই পড়াশোনায় ভালো। আমরা খুবই আনন্দিত।’’উদিতার বাঁধাধরা পড়াশোনার কোনও সময় ছিল না। ইচ্ছে হলেই বই নিয়ে বসে পড়ত। উদিতার বাবা বিশ্বজিৎ রায় ব্লকের খালিনা হাই স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। মা অনুরূপা রায় বেলদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নার্স। পড়াশোনার ফাঁকে আবৃত্তি ও ছবি আঁকা নিয়ে থাকত উদিতা। বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটও তার জানা। পহেলগাম, আর জি কর ও শিক্ষক দুর্নীতি নিয়ে তার ছোট্ট বক্তব্য, ‘‘এসব তো দুঃখজনক ঘটনা। এসব তো চাই না।’’ অষ্টম স্থানে রয়েছে ঘাটালের মনসুকা লক্ষীনারায়ণ হাইস্কুলের ছাত্র অরিত্র সাঁতরা। তার কথায়, ‘‘এক থেকে দশের মধ্যে থাকব,পরীক্ষা দিয়ে সেটা ভেবেছিলাম। ফল দেখে ভাল লাগছে।’’ ঘাটালের উত্তরে বন্যাপ্রবণ প্রান্তিক গ্রামের অরিত্র ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল। স্কুলে বরাবরই প্রথম হত। পড়াশোনার পাশাপাশি সাম্প্রতিক নানা ঘটনা নিয়েও সে চিন্তা করে। ঘাটাল শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে মনসুকায় বাড়ি অরিত্রের। বাবা বিশ্বজিৎ সাঁতরা ওষুধ ব্যবসায়ী। দিনে সাতঘণ্টা পড়াশোনা করত সে। ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস, বিডিও অভীক বিশ্বাস-সহ শিক্ষা দফতরের পদস্থ আধিকারিকরা অরিত্রের বাড়িতে পৌঁছে শুভেচ্ছা জানান। ছিলেন এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও।

    নবম স্থানে রয়েছে দাঁতনের বাইপাটনার বাসিন্দা অঙ্কুশ জানা। সে বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি স্কুলের ছাত্র। ছেলের পড়াশোনার জন্যেই বেলদাতে ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকেন বাবা তাপস জানা। পড়াশোনার পাশাপাশি অঙ্কুশ গল্প ও দর্শনের বইও পড়ত। পছন্দের লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। অঙ্কুশ জানায়, শিক্ষকেরা তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। আগামী দিনে আইআইটিতে পড়ে গবেষণা করতে চায় সে। মা রঞ্জিতা বলেন, ‘‘নিজে অনেকটা দায়িত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছে। অনেকটা পরিশ্রম করেছে। আমরা খুশি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)