জয় জগন্নাথ… ভক্তির টানে চারদিনে ১০ লক্ষের বেশি ভক্ত সমাগম দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে
প্রতিদিন | ০৪ মে ২০২৫
রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: সাধারণের জন্য দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দরজা খুলেছে অক্ষয় তৃতীয়ায়, বুধবার। দ্বারোদঘাটনের পর ওই দিনই দশনার্থীর সংখ্যা দু’লক্ষ পার করেছিল। শনিবারের মধ্যে এই সংখ্যাটা ১০ লক্ষ পার করল। জানালেন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দায়িত্বে থাকা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট (কলকাতা) রাধারামণ দাস। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংখ্যাটা আরও বাড়বে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে শ্রীক্ষেত্র হয়ে উঠেছে দিঘা। তৈরি হয়েছে জগন্নাথ মন্দির। অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যতিথিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দ্বারোদঘাটনও হয়েছে মন্দিরের। তারপরই আমজনতার জন্য মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই মন্দিরে ঢুকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রাধারামণ দাস। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত, পড়শি রাজ্য থেকে পুণ্যার্থী ভিড় জমাচ্ছেন মন্দিরে। ফলে স্বাভাবিকভাবে সাড়ে তিনদিনে মন্দিরে জনসমাগম পেরিয়েছে ১০ লক্ষ।
সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে দিঘার জগন্নাথ মন্দির। এই সময়ের মধ্যে যে কেউ জগন্নাথদেবের দর্শন পাবেন। পুণ্যার্থীদের দাবি, মন্দিরের ভিতরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। তাই পুজো দিতে বেশি সময় লাগছে না। অতিরিক্ত পুণ্যার্থী সমাগমের কথা মাথায় রেখে মন্দির চত্বরের নিরাপত্তাও যথেষ্ট আঁটসাঁট। তাই বিপদের কোনও আশঙ্কা নেই বলেই দাবি ভক্তদের। মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, মন্দিরের গঠনশৈলী মন ছুঁয়ে গিয়েছে ভক্তদের। তাঁরা পুজো দিয়ে অত্যন্ত খুশি। সকলে এসেই মন্দিরের প্রশংসা করছেন।
উল্লেখ্য, দিঘার জগন্নাথ মন্দির রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। অন্তত ৮০০ কারিগর দিঘায় আসেন মন্দির নির্মাণের কাজে। তাঁরা সকলেই রাজস্থানের বাসিন্দা। মন্দিরের প্রধান দ্বার দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই প্রথমে পড়বে তিনটি দীপস্তম্ভ। পুরীর মতো দিঘার মূল মন্দিরে প্রবেশের জন্য রয়েছে চারটি দ্বার। একইভাবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের সিংহদ্বার বা মন্দিরের প্রবেশদ্বারের সামনে রয়েছে কালো রঙের অরুণ স্তম্ভ। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের সামনে কালো পাথরে তৈরি ৩৪ ফুট লম্বা ১৮ মুখী অরুণ স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে। আর এই স্তম্ভের মাথায় রয়েছে অরুণা মূর্তি। অরুণ স্তম্ভের সামনের সিংহদ্বারে ঢুকলেই পুরীর মতোই সোজাসুজি জগন্নাথের মূর্তি। পূর্ব দিকের মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বার বা সিংহদ্বারের বিপরীতে ব্যাঘ্রদ্বার। উত্তরে হস্তিদ্বার আর দক্ষিণে অশ্বদ্বার। আর এই চমৎকার গঠনশৈলীর সাক্ষী হতে প্রতিদিন মন্দিরে ভিড় জমাচ্ছেন হাজার-হাজার পর্যটক।