অর্ণব দাস, বারাসত: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় সাফল্যের স্বপ্ন কে না দেখে? সেই স্বপ্ন যদি সত্যি হয়, আনন্দের সীমা-পরিসীমা থাকে না। তবে উলটো ছবিও তো দেখা যায় বাস্তবে। অল্পের জন্য ফসকে যায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। হাবড়ার সৌম্যজিৎ যাদব বেশ কিছু নম্বরের জন্য মাধ্যমিকের মেধাতালিকা থেকে ছিটকে গিয়েছে। প্রথম দশে থাকতে না পারার আক্ষেপ তার গলায়। তারপরও অবশ্য অন্য অঙ্ক শেখাল সৌম্যজিৎ! মেধাবী এই ছাত্রের কথায়, ”শিক্ষায় ১০০শতাংশ দিতে হবে, এর চেয়ে বেশিই ফেরত পাবেন। শিক্ষা এমন একটা বিষয়, যাতে মনপ্রাণ ঢেলে দিলে কিছুতেই ঠকবেন না।” সেইসঙ্গে নিজের ফলাফলের ব্যাখ্যায় সে বলছে, ”আমি নিশ্চয়ই ১০০ শতাংশ দিতে পারিনি। তাই নম্বরটা যা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে কম পেলাম। আরও বেশি পড়াশোনায় মন দেওয়া দরকার ছিল।” ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে চায় সৌম্যজিৎ।
হাবড়ার বিড়া নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা সৌম্যজিৎ যাদব। বাবা বিশ্বজিৎ যাদব হাবড়া থানার সিভিক ভলান্টিয়ার। ছেলে মাধ্যমিকে ৬৬৪ অর্থাৎ প্রায় ৯৫ শতাংশ নম্বর পাওয়ায় খুশির হাওয়া পরিবারে। শুধু তাই নয়, হাবড়া থানার তরফে শনিবার সৌম্যজিৎকে সংবর্ধনা দেওয়া হল। থানায় ডেকে ভারপ্রাপ্ত আইসি অনুপম চক্রবর্তী এই মেধাবী ছাত্রের হাতে তুলে দিলেন পুষ্পস্তবক এবং একটি ল্যাপটপ। ছিলেন হাবড়া ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সুবীর কুমার দণ্ডপাট। সৌম্যজিতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে সবরকমভাবে পাশে থাকবে পুলিশ, এই আশ্বাস দেন আইসি অনুপম চক্রবর্তী।
সৌম্যজিৎ বরাবর পড়াশোনায় ভালো। মাধ্যমিকের প্রথম দশের মধ্যে থাকবে বলে আশা করেছিল। কিন্তু ২০ নম্বরের জন্য তা হয়নি। তা নিয়ে বারবার সৌম্যজিতের গলায় আক্ষেপ, ”এক থেকে দশের মধ্যে থাকলে ভালো লাগত। কিন্তু তা তো হল না। এই যে সংবর্ধনা দেওয়া হল আমাকে, সেটার যোগ্য আমি নই। নিশ্চয় শিক্ষায় আরও বেশি দেওয়া দরকার ছিল। কারণ আমি দেখেছি, শিক্ষায় ১০০ শতাংশ দিলে তার বেশিই ফেরত পাওয়া যায়।” ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায় সৌম্যজিৎ। মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে তার। সে মনে করে, রাজনীতিতে শিক্ষিত মানুষ দরকার। তাহলে দেশের হাল কিছুটা বদলাতে পারে।