তৃণমূল কর্মী ‘খুন’, বাড়ির পাশে নদীর পাড় থেকে বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার
বর্তমান | ০৪ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, ইটাহার: বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে শ্রীমতী নদীর পাড় থেকে উদ্ধার তৃণমূল কর্মীর ক্ষতবিক্ষত বিবস্ত্র দেহ। শনিবার সকালে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় ইটাহারের সোনাডাঙি গ্রামে। মৃতের নাম সুব্রত দেবনাথ (৩০)। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। মৃতের শরীর, মাথা ও মুখে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এসডিপিও নীলেশ শ্রীকান্ত গাইকর ও ইটাহার থানার আইসি সুকুমার ঘোষ। পুলিস দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখার পাশাপাশি মৃতের পরিজন সহ এলাকার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। খুনের অভিযোগ পেয়ে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে পুলিস।
সুব্রত বিমা সংস্থার এজেন্ট ও গৃহশিক্ষক ছিলেন। বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী ও দু’বছরের ছেলের সঙ্গে থাকতেন তিনি। শুক্রবার রাত ন’টায় খাবার খেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সুব্রত। রাত ১২টা পেরিয়ে গেলেও সুব্রত বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্ত্রী একাধিকবার ফোন করেন। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। চিন্তিত হয়ে পড়েন সুব্রতর বাবা-মা। সুব্রতর বন্ধুদের ফোন করেও কোনও খোঁজ মেলেনি। শনিবার সকালে বাড়ির কাছেই সুব্রতকে নদীর ধারে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। সুব্রতর পরনের জামা ছেঁড়া ছিল এবং প্যান্ট দেহের কিছুটা দূরে পড়ে ছিল। স্বামীর মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন সীমা দেবনাথ। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে সুব্রতর দেহ ময়নাতদন্তের পর বাড়িতে নিয়ে এলে কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর পরিবার সহ প্রতিবেশীরা।
নদী লাগোয়া রাস্তা থেকে মৃতের জুতো, চশমা এবং আরও একজোড়া জুতো উদ্ধার করেছে পুলিস।
পাশাপাশি শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় নদীর পাশের রাস্তায় সুব্রতর মোবাইল কুড়িয়ে পান তাঁর বন্ধু গোপাল হাঁসদা। তিনি জানান, সুব্রতর মোবাইল ফোনটি রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। কিন্তু সুব্রত সেখানে ছিল না।
মৃতের পরিবারের সন্দেহ,একবছর আগে দুর্গাপুজো নিয়ে পাড়ার এক যুবকের সঙ্গে বিবাদ হয় সুব্রতর। সেই যুবক তখন সরাসরি খুনের হুমকি দেয়। পুরনো আক্রোশবশে খুন করা হয়েছে সুব্রতকে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর শ্যামল। তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে খুন বলে মনে হচ্ছে না।এদিন তৃণমূল কর্মীর খুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান জয়হাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রফিজুদ্দিন শেখ। তিনি প্রশাসনের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।