বাল্যবিবাহ মুক্ত জেলা গড়তে ১০ দিনের বিশেষ অভিযানে ধর্মগুরুরা
বর্তমান | ০৪ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, তপন: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত জেলা গড়ার টার্গেট প্রশাসনের। সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন এবং শক্তি বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে ১০ দিনের বিশেষ অভিযান। যার সূচনা হয়েছে অক্ষয় তৃতীয়া থেকে। ‘বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে ধর্মগুরু’ নামক এই সচেতনতামূলক অভিযানের মূল উদ্দেশ্য, জেলার প্রতিটি প্রান্তে বাল্যবিবাহ রোধে সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
এই অভিযানে পুরোহিত, ইমাম, ফাদার সহ অন্য ধর্মের গুরুরা নিজেদের এলাকায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করবেন। বাল্যবিবাহের ফলে কিশোরী বয়সেই গর্ভধারণজনিত জটিলতা, শিশুমৃত্যুর আশঙ্কা, মা ও শিশুর অপুষ্টি, শিক্ষাজীবন বাধাপ্রাপ্ত হওয়া এবং আর্থ-সামাজিক সঙ্কট সহ একাধিক ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে মানুষকে জানাবেন।
শুধু বাল্যবিবাহ নয়, এই বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে শিশু পাচার রোধ এবং শিশু সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কেও এলাকাবাসীকে সচেতন করা হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শিশু পাচার রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে আলোচনা করছে প্রশাসন। অভিভাবকদের বোঝানো হচ্ছে, কীভাবে শিশুদের শিক্ষিত ও সুরক্ষিত পরিবেশে বড় করে তোলা যায়।
এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) হারিস রশিদ বলেন, আমাদের জেলায় বাল্যবিবাহ একটি বড় সমস্যা। যা রোধে ইতিমধ্যেই অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে প্রকল্পগুলির যে ফলাফল পাওয়া উচিত ছিল সেই অনুযায়ী ফলাফল পাওয়া যায়নি। তাই ধর্মগুরুদের সহযোগিতায় দশদিন ধরে অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আশা করা যায় কিছুটা হলেও বাল্যবিবাহের হার কমবে।
এবিষয়ে শক্তি বাহিনীর জেলা কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান বলেন, সমাজের প্রতিটি স্তরের সহযোগিতা ছাড়া বাল্যবিবাহ রোধ সম্ভব নয়। তাই ধর্মগুরুদের এই অভিযানে যুক্ত করা হয়েছে। কারণ, তাঁরা সমাজে মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রভাবশালী। জেলার যে সমস্ত এলাকায় বাল্যবিবাহের মতো ঘটনার নজির বেশি রয়েছে, সেই এলাকাগুলিতে বেশি করে প্রচার চালানো হবে।
এই ১০ দিনের অভিযান জেলাজুড়ে বিভিন্ন ব্লকে আয়োজিত হচ্ছে। থাকছে জনসভা, র্যালি, আলোচনাচক্র এবং ধর্মীয় বক্তৃতার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি। এই সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন আশাবাদী, খুব শীঘ্রই দক্ষিণ দিনাজপুর একটি সম্পূর্ণ বাল্যবিবাহ মুক্ত জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।