নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: পহেলগাঁওয়ের হামলার বদলা নিতে দেরি কেন? প্রশ্ন তুললেন ১৯৮৩-এর বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট দলের সদস্য কীর্তি আজাদ। শনিবার দুর্গাপুরে নিজের বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস এমপি। সেখানেই তিনি বলেন, স্থলভাগে ট্যাঙ্ক ছুটছে, আকাশে হেলিকপ্টার উড়ছে। তারপরও অ্যাকশন নিতে কেন দেরি হচ্ছে? এখনও পর্যন্ত শুধুই ‘ঠন্ঠন্ গোপালং’, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এরপর তিনি বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তোপ দাগা শুরু করেন। তিনি বলেন, ওঁদের ১১বছরের ক্ষমতায় দেশজুড়ে ২৩টি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে। হামলার তালিকা তুলে ধরে তাঁর প্রশ্ন, ইন্টেলিজেন্স কোথায়? তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, পুলওয়ামায় ২৫০কিলোগ্রাম আরডিএক্স কীভাবে এসেছিল, তার উত্তর কিন্তু প্রকাশ্যে আসেনি।
তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজারের(এনএসএ) পদত্যাগ না করা নিয়েও প্রশ্ন ছোঁড়েন। তিনি বলেন, ২৬/১১ মুম্বই হামলার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও এনএসএ পদত্যাগ করেছিলেন। এক্ষেত্রে তা হল না। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে এমপি এক বছরে তাঁর সংসদ সদস্য হিসেবে কী ভূমিকা ছিল, তার ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী তথা দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার ও দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। সেখানেই কীর্তিবাবু জানান কীভাবে দুর্গাপুরে বন্ধ কেন্দ্রীয় সার কারখানা খোলাতে তিনি তৎপর হয়েছেন। তাঁর দাবি, এখানে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কোল বেসড গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আমাদের এই সম্পদ ব্যবহার করে বেসরকারি সার কারখানা গড়ে উঠছে। অথচ, দুর্গাপুরে কেন রাষ্ট্রীয় সার কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে থাকবে? তা খুললে স্থানীয়রা যেমন কাজ পাবে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আদায় হবে। এরপরই রাজ্যকে কেন্দ্রের সার বঞ্চনা নিয়ে সরব হন সাংসদ। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে ৭.০৫ লক্ষ মেট্রিক টন সারের প্রয়োজন। আমরা রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে সেই পরিমাণ সার দেওয়ার দাবি জানাই। কেন্দ্র ৫ লক্ষ মেট্রিক টন দিতে সম্মত হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সার দিয়েছে মাত্র ১.৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন। রাজ্যর চাহিদা অনুযায়ী সার দিতে পারছে না। আবার বাংলায় সার কারখানাও খুলছে না। বিহারের দ্বারভাঙার দু’বারের প্রাক্তন এমপি প্রশ্ন ছোড়েন, বিহারের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই কি মোদিজি জাতি জনগণনা করানোর সিদ্ধান্ত নিলেন? গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পরাজিত করে ‘জায়েন্ট কিলার’ হয়েছিলেন কীর্তি আজাদ। নিজের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়েও মুখ খোলেন তৃণমূলের তারকা এমপি। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের মেয়ের বিয়েতে আমরা খেতে গিয়েছিলাম। তার মানে কি আমরা বিজেপি হয়ে গেলাম? এই ধরনের রাজনীতি করা উচিত নয়।