• মাধ্যমিকের সাঁওতালি মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রথম বাঁকুড়ার কালীরাম
    বর্তমান | ০৪ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: মাধ্যমিকে সাঁওতালি মাধ্যমে রাজ্যে সম্ভাব্য প্রথম বাঁকুড়ার কালীরাম মুর্মু। গড় রাইপুর উচ্চবিদ্যালয়ের এই কৃতী ছাত্র প্রান্তিক কৃষক পরিবারের সন্তান। সে ইংরেজি ছাড়া সমস্ত বিষয়ের উত্তরপত্র অলচিকি হরফে লিখেছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে সাংবাদিক সম্মেলনে সাঁওতালি মাধ্যমের মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। গড় রাইপুর উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাঁকুড়ার মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়কের মাধ্যমে পর্ষদ সভাপতির কাছে ওই মেধা তালিকা প্রকাশের আবেদন করেছে। জেলা পরীক্ষা আহ্বায়ক গৌতম দাস বলেন, এখনও পর্যন্ত সাঁওতালি মাধ্যমে কালীরামের চেয়ে বেশি নম্বর কেউ পায়নি বলেই আমরা জেনেছি। বিদ্যালয়ের আবেদনপত্র পর্ষদে পাঠানো হয়েছে। রাইপুরের মুড়াচারা গ্রামের বাসিন্দা কালীরাম বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে চিকিৎসক হতে চায়। সে সাঁওতালিতে ৯০, ইংরেজিতে ৬৮, অঙ্কে ৯৫, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৪, জীবনবিজ্ঞানে ৯৫, ইতিহাসে ৯১ ও ভূগোলে ৯৯ পেয়েছে। মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৩২। কালীরাম ভালো ফুটবল খেলে। অবসর সময়ে ছবিও আঁকে সে। তার ছোট ভাই নবম শ্রেণিতে পড়ে।

    কালীরাম বলে, আমি গতবছর আন্তঃজেলা ফুটবল প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে বাঁকুড়া দলে খেলেছি। নদীয়ায় ওই খেলা হয়েছিল। রোনাল্ডো আমার প্রিয় ফুটবলার। পঞ্চম শ্রেণি থেকে স্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে এই কৃতী পড়ুয়া। তবে চাষের মরশুমে ছুটি পেলেই সে বাড়ি চলে যেত। বাবাকে চাষের কাজে সাহায্য করত। কালীরামের বাবা লখিরাম মুর্মু বলেন, আমাদের সামান্য জমি আছে। সংসার চালাতে দিনমজুরিও করি। আমার স্ত্রী লক্ষ্মীমণিও খেতমজুরি করে। ছেলে ডাক্তারি পড়তে চায়। কিন্তু, তা পড়ার খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য নেই। ফলে চিন্তা হচ্ছে। গড় রাইপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন মণ্ডল বলেন, এবার আমাদের বিদ্যালয় থেকে সাঁওতালি মাধ্যমে ১০জন মাধ্যমিক দিয়েছিল। সবাই পাশ করেছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, কালীরামই স্কুল তথা রাজ্যে সম্ভাব্য প্রথম হয়েছে। পর্ষদ যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সাঁওতালি মাধ্যমে প্রথম স্থানাধিকারী সহ পুরো মেধা তালিকা প্রকাশ করে-সেজন্য আবেদন করেছি। আমি কালীরামের বাড়ি গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। শনিবার রাইপুরের বিধায়ক মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু সহ ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় থানার আধিকারিকরাও কালীরামের বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বিধায়ক বলেন, ওই ছাত্র আমাদের ব্লক তথা জেলার গর্ব। তার উচ্চশিক্ষায় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখা হবে। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)