• কাঁকসায় মোটরভ্যান চালকের মেয়ের নজরকাড়া ফলাফল
    বর্তমান | ০৪ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানকর: নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে অভাবই নিত্যসঙ্গী। কিন্তু সেই অভাবের সঙ্গে লড়াই করে নজরকাড়া ফল করল কাঁকসার সিলামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী বিউটি মেটে। ৬১৪ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে সেরা হয়েছে সে।

    সিলামপুরের কাছে ভরতপুরে বিউটির বাড়ি। তার বাবা বিজয় মেটে মোটরভ্যান চালান। সকাল হলেই মোটরভ্যান নিয়ে পানাগড়, ভরতপুর, সিলামপুর সহ নানা জায়গায় যান তিনি। দৈনিক ২০০-২৫০টাকা আয় হয়। যদিও আয়ের কোনও নিশ্চয়তা নেই। বিউটির সাফল্যে বিজয়বাবু খুশি। কিন্তু মেয়ের একাদশ-দ্বাদশ ও উচ্চশিক্ষার খরচ কীভাবে চালাবেন-তা নিয়েই তিনি চিন্তিত। বিজয়বাবু বলেন, বাড়িতে মা, বোন, স্ত্রী, ছেলেমেয়ে রয়েছে। ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয়, তাতে সংসার চালাতেই খরচ হয়ে যায়। মেয়ের পড়াশোনায় কোনও ফাঁক না রাখার চেষ্টা করেছি। মেয়ে স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়েছে। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে বা স্নাতকস্তরে পড়ার খরচ রয়েছে। এবার কী হবে জানি না। স্থানীয়রা জানান, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী বিউটি। অভাব কোনও দিন তার একাগ্রতায় বাধা হতে পারেনি। সে বাংলায় ৯৪, ইংরেজিতে ৭৪, গণিতে ৮৪, ভৌতবিজ্ঞানে ৮৩, জীবনবিজ্ঞানে ৯০, ইতিহাসে ৯২ ও ভূগোলে ৯৭ নম্বর পেয়েছে। বিউটি বলল, আমার এই সাফল্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবদান রয়েছে। তাঁরাই বলেছিলেন, কীভাবে মাধ্যমিকের উত্তর লিখতে হবে, কীভাবে খাতা সাজাতে হবে। সেইমতো পড়াশোনা করেছি। আমি স্বনির্ভর হয়ে পরিবারের অভাব দূর করতে চাই। তাই আমার ইচ্ছে, ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো। কাঁকসা গার্লস স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সিলামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক চঞ্চল দাস বলেন, বিউটি আমাদের স্কুলের গর্ব।
  • Link to this news (বর্তমান)