• আজ়াদের কাজকর্মে রহস্য, আধারে ‘সার্ভিস চার্জ’ দেড় লক্ষ!
    এই সময় | ০৪ মে ২০২৫
  • এই সময়: পাকিস্তানি নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও জালিয়াতি করে ভুয়ো পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট বানিয়ে এ রাজ্যে দীর্ঘদিন আত্মগোপন করেছিল আজাদ মল্লিক। তাকে জেরা করে এ বার জানা যাচ্ছে, বিরাটিতে ঘাঁটি গাড়ার পর ভুয়ো নথিপত্রের কারবারকেই উপার্জনের অন্যতম পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিল সে।

    যারা অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশ করে পশ্চিমবঙ্গে বা ভারতের অন্য রাজ্যে থাকতে চাইত, তাদের ভুয়ো নথি এবং পাসপোর্ট তৈরি করে দিত ‘আজাদ অ্যান্ড কোম্পানি’ই। তার জন্যে এক থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ‘সার্ভিস চার্জ’ও দাবি করত সে!

    এখন ইডি হেফাজতে রয়েছে আজাদ। কিন্তু তার এই কীর্তিকলাপ একে একে সামনে আসায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। পাকিস্তানি একজন নাগরিক কী ভাবে এক দশকের বেশি সময় ধরে আত্মগোপন করেছিল, কী ভাবে সে এত সহজে ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে ফেলেছিল ––– সেই রহস্যের সমাধন করতে চাইছেন তাঁরা।

    সূত্রের খবর, বেআইনি নথি তৈরির চক্রে বেশ কয়েক জন এজেন্ট এবং সাব–এজেন্টও নিয়োগ করেছিল আজাদ। তারাই আজাদের কাছে নিয়ে আসত অনুপ্রবেশকারীদের। দু’পক্ষের রফা হলেই আবেদনকারী হাতে পেয়ে যেতেন ভারতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট।

    জানা যাচ্ছে, প্যান, ভোটার–আধার কার্ড তৈরিতে ‘সার্ভিস চার্জ’ হিসেবে বিদেশি নাগরিকদের কাছে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করত আজাদ। সেই নথির ভিত্তিতে আবার পাসপোর্ট তৈরি করতে হলে দিতে হত আড়াই লক্ষ টাকা। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ হয়ে যখন সে এ রাজ্য আসে, তখন পাসপোর্ট তৈরি করতে প্রায় এক লক্ষ টাকা তাকেও দিতে হয়েছিল বলে প্রাথমিক জেরায় ইডি আধিকারিকদের জানিয়েছে আজাদ।

    এই ক’বছর আজাদ কোথায় কোথায় গিয়েছে, কাদের সঙ্গে মেলামেশা করত—সে সব বিষয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে সব তথ্য উঠে আসছে, তাতে অন্তত একশো বিদেশি নাগরিককে সে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছিল বলে সূত্রের খবর।

    এই সংখ্যাটা আরও বেশিও হতে পারে বলে আশঙ্কা তদন্তকারী অফিসারদের। বাংলাদেশের নাগরিক ছাড়াও পাকিস্তানের নাগরিকদের তিনি পাসপোর্ট তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই চক্রের নেটওয়ার্ক বাংলার পাশাপাশি দিল্লি, মুম্বই, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানেও সক্রিয় থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

  • Link to this news (এই সময়)