• ধর্না উঠলেও ব্যারিকেড বহাল, দুর্ভোগে বাসিন্দারা
    এই সময় | ০৪ মে ২০২৫
  • এই সময়: চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন-ধর্নায় সপ্তাহ কয়েক আগেই উত্তাল হয়েছিল সল্টলেকের করুণাময়ী চত্বর। কারণ, এসএসসি-র প্রধান কার্যালয় আচার্য সদন সল্টলেকের ইই-ব্লকে। তার পরে কেটে গিয়েছে তিন সপ্তাহ। ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা কাজে ফিরেছেন। তথাকথিত ‘অযোগ্য’দের ভিড়ও হালকা হতে হতে এখন প্রায় ভিড় শূন্য। ভিড় কমলেও এখনও কার্যত অবরুদ্ধ ইই-ব্লক। চাকরিহারদের আন্দোলনের জেরে ওই ব্লকের পেট্রল পাম্প থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস পর্যন্ত রাস্তা এখনও ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করা। অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান রাস্তাটিই অবরুদ্ধ থাকায় ওই ব্লকের বাসিন্দাদের অনেকটা পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। তাতে হয়রানি বাড়ছে।

    বর্তমানে সেক্টর ফাইভ থেকে করুণাময়ীগামী গাড়িগুলিকে ইই ব্লকের পেট্রল পাম্পের পাশের রাস্তা থেকে বাঁ-দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই গাড়িগুলি খালপাড় হয়ে সেচ আবাস আইল্যান্ড হয়ে ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের পাশ দিয়ে মেন রাস্তায় পৌঁছচ্ছে। তবে, করুণাময়ী মোড় থেকে সেক্টর ফাইভে যাওয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইই ব্লকের ভিতরে খালধার লাগোয়া রাস্তায় এত দিন দু’দিকেই গাড়ি যাতায়াত করতে পারত। এখন আন্দোলনের কারণে গাড়ি ঘোরানোর ফলে ব্লকের ওই রাস্তাটি একমুখী হয়ে গিয়েছে। এখন ওই রাস্তাটি ধরে শুধু চিংড়িঘাটার দিকে যাওয়া যাচ্ছে। ফলে ব্লকের বাসিন্দাদের বাড়ি ফেরার সময়ে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের সিংহভাগ সরে যাওয়ার পরেও কেন এখনও রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া রয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ইই ব্লকের বাসিন্দাদের মধ্যে।

    পুলিশ সূত্রে খবর, ইই ব্লকের বেশকিছু বাসিন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এ ভাবে আন্দোলনের কারণ দেখিয়ে রাস্তা বন্ধ রাখার ফলে সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, পেট্রল পাম্প থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে যাঁদের বাড়ি, ওই রাস্তায় প্রবেশাধিকার মিলছে না তাঁদেরও। পেট্রল পাম্প থেকে তাঁদের বাড়ি খুব কাছেই— এ কথা বলার পরেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না স্থানীয়দের। উল্টে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের অনেকে খারাপ ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।

    ইই ব্লকের বাসিন্দা কৃষ্ণা বসুর বক্তব্য, ‘এখনও রাস্তা আটকে থাকার কারণে আমার মতো ব্লকের প্রায় সব বাসিন্দাকেই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। ব্লক লাগোয়া খালধারের রাস্তায় যেখানে দু’দিক দিয়েই গাড়ি চলাচল করত, সেটা এখন একমুখী হয়ে গিয়েছে। মেন রাস্তা ছেড়ে ওই খালধারের রাস্তা দিয়েই এখন বাস থেকে সব ধরনের গাড়ি চলছে। ফলে যানজটও হচ্ছে।’

    আর এক বাসিন্দা মৈনাক মজুমদার বলেন, ‘এত দিন আন্দোলনের জন্য পুলিশ, সংবাদমাধ্যম-সহ বিভিন্ন গাড়ি আমাদের বাড়ির সামনে দাঁড় করানো থাকত। সেটা এখনও আছে। এর ফলে নিজেদের গাড়ি যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে।’ সেখানকার আর এক বাসিন্দা কাজল প্রধানের কথায়, ‘পরিস্থিতি এমনই যে, হঠাৎ আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢুকতেও বেগ পেতে হবে।’ কী বলছে প্রশাসন? বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘ইই ব্লকের বাসিন্দাদের সমস্যা হচ্ছে, সে কথা অস্বীকার করব না। বাসিন্দাদের যাতে গন্তব্যে পৌঁছতে সমস্যা না হয়, সে জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ কবে উঠবে ব্যারিকেড? এর সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।

  • Link to this news (এই সময়)