স্টাফ রিপোর্টার: দিলীপ ঘোষের পর দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করলেন মালদহের দু’বারের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। দিঘায় জগন্নাথধাম দর্শনে গিয়ে দিলীপ ঘোষ যে অন্যায় করেননি তা জানিয়ে মালদহের সাংসদ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির করেছেন সাধুবাদ জানাচ্ছি। জগন্নাথ মন্দির করা মানে সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসবেন। বিদেশি পর্যটকরা আসবেন দিঘায় জগন্নাথ দর্শনে। পর্যটন বাড়বে, কর্মসংস্থান হবে। এতো খুব ভালো। সারা বাংলা ও দেশের মানুষ জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ পাবেন। আর দিঘায় গেলে আমিও জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ নিতে যাব।” খগেন মুর্মুর পাশাপাশি সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যও দিলীপের সমর্থনে সওয়াল করেছেন। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি যে হাজির হবেন সেকথাও স্পষ্ট জানিয়েছেন বিকাশ।
দিলীপ ঘোষকে নিয়ে ঘরে-বাইরে আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপির শাসকগোষ্ঠীর একাংশ বিশেষ করে যারা দলবদলু। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা নেতারাই মূলত দিলীপের বিরুদ্ধে মুখ খুলে চলেছেন। দিঘায় গিয়ে দিলীপ ঘোষের জগন্নাথ মন্দির দর্শন নিয়ে বঙ্গ বিজেপি কিন্তু দুভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। মন্দির দর্শনে গিয়ে দিলীপ ঘোষ যে অন্যায় করেননি, সেই মত পোষণ করেছেন দলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনি পাত্র, বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ, আর সর্বশেষ সাংসদ খগেন মুর্মু। আর দিলীপকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছেন দলবদলু বিজেপি সৌমিত্র খান, অর্জুন সিং-সহ আরও কয়েকজন।
দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে বিজেপির যাঁরা পোস্ট করছেন তাঁদের এদিন সতর্ক করে দিয়েছেন দলের রাজ্য মুখপাত্র সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। শমীকের বক্তব্য, “শুধু সৌমিত্র খাঁ নয়, আরও অনেকে পোস্ট করছেন। সেটা অনভিপ্রেত। সতর্ক থাকা উচিত সকলের। দল কঠোরভাবে নজর রাখছে। ব্যবস্থা নেবে। নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য রাখা উচিত। দিলীপদা আমাদের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, বিধায়ক ও সাংসদ ছিলেন। পরিসংখ্যানের হিসেবে সফলতম সভাপতিও ছিলেন। দিলীপ ঘোষ কী বলবেন সেটা দিলীপ ঘোষের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।” এরপরই শমীকের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “প্রত্যেকের পোস্ট, আর তাঁদের রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে দল জানে। দিলীপদাকে পার্টি কর্মীরা চেনে। দিলীপ ঘোষ, দিলীপ ঘোষই থাকবেন।”
এদিকে, দলের মধ্যে তাঁর সমালোচকদের জবাব দিতে অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ মন্তব্য করে দিলীপ ঘোষ এদিন বলেছেন, “মোদিজি উদ্বোধন করলে মন্দির। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করলে মন্দির নয়। এ বিচার আমার নয়।” নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে অযোধ্যায় রামের মন্দির এবং দিঘায় মমতার উদ্যোগে জগন্নাথদেবের মন্দির, এই দুই ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দিয়েছেন দিলীপ।