মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দিঘায় জগন্নাথ ধাম উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যাওয়ায় দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপির ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে। এ বার দলের কার্যালয়ে ঢুকতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তুলে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শমিত মণ্ডল। দলের অন্দরে দিলীপ-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শমিত। দিলীপ নিজে শনিবারও ফের এক দিকে যেমন ‘নব্য বিজেপি’কে (দিলীপের কথায় ‘হঠাৎ বিজেপি) তোপ দেগেছেন, তেমনই নিশানা করেছেন মমতাকেও! বিজেপি নেতৃত্ব প্রকাশ্যে অবশ্য ঐক্যের বার্তাই দিচ্ছেন।
দিলীপের দিঘা-যাত্রার পরে তাঁর অনুগামী ও বিরোধী বলে পরিচিতদের মধ্যে ‘কোন্দল’ দলের মেদিনীপুর জেলা কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় নেমে এসেছিল। কার্যালয়ে ঢুকতে গিয়ে বাধা পেয়েছিলেন শমিত। কিছু সূত্রে দাবি, শমিতদের উপরে যাঁরা চড়াও হয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁরা দলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। শমিতের অবশ্য বক্তব্য, “আমরা এফআইআর করেছি। ওঁরা কেউ দলের নেতা-কর্মী হতে পারেন না। ওঁরা দুষ্কৃতী, সমাজবিরোধী! আমরা চার জনকে চিহ্নিত করেছি।” এর সঙ্গেই ঐক্যের বার্তা দিয়ে তাঁর সংযোজন, “মনে হয় না দিলীপদা, শুভেন্দুদার লড়াই আছে। হামলার পিছনে আমাদের, না কি বিরোধী দলের কেউ আছেন, তা তদন্ত হলেই বোঝা যাবে।” মেদিনীপুরে শুক্রবার সন্ধ্যায় শুভেন্দুর নেতৃত্বে মিছিলেও ছিলেন শমিত।
দিলীপ দলের বিধায়ক ও নেতাদের একাংশের কটাক্ষকে অবশ্য ‘মেজাজেই’ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আগেও এমন অনেকেই বলেছেন। পরে পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন! দলকে দাঁড় করিয়েছি। ‘হঠাৎ বিজেপি’ যাঁরা, তাঁরা অনেক কিছু বলবেন।” এর সঙ্গেই দলের ‘শহিদ দিবসে’র মঞ্চে তাঁকে দেখা না-যাওয়া প্রসঙ্গে দিলীপের বক্তব্য, “গত তিন বছর ধরে দলের কোন কর্মসূচিতে থাকি? আমি নিজের কর্মসূচি নিজেই তৈরি করি! মাঝেমাঝে বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।” এর সঙ্গেই, দিঘার অনুষ্ঠানে তাঁর যাওয়ার বিষয়টিকে সামনে রেখে মমতাকেও বিঁধেছেন দিলীপ। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বলেছেন, “আমি মমতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সৌজন্য দেখিয়েছি। কিন্তু উনি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের সময়ে সৌজন্য দেখাতে পারেননি।”
এ দিকে, বিজেপি সূত্রে খবর, বিরোধী দলনেতার নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির মণ্ডল কমিটি গঠনে ‘আদি’ ও ‘নব্য’ দুই শিবিরের প্রতিনিধিত্ব রেখে ‘বিবদমান’ শুভেন্দু ও দিলীপ অনুগামীদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা হচ্ছে। যদিও বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারীর দাবি, “শুভেন্দু ও দিলীপ অনুগামী বলে কিছু নেই।”