এপ্রিলের শুরুতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাল রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন। শনিবার তারা শীর্ষ আদালতে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রের খবর, আগামী ৮ মে ওই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এসএসসির তরফে আগেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল, যোগ্য-অযোগ্যদের বাছাই করে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে। মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, রাজ্যের তরফে আদালতে যাওয়া হবে। সেই মতো আদালতের দ্বারস্থ হল রাজ্য ও এসএসসি।
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল। ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগে দুর্নীতি এবং একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠছিল। সেই মামলায় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানায়, সঠিক তথ্য না থাকায় যোগ্য এবং অযোগ্যদের পৃথকীকরণ করা সম্ভব হয়নি। তাই পুরো প্যানেল বাতিল করা হচ্ছে। নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবে এসএসসি। একই সঙ্গে চিহ্নিত অযোগ্যদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেয় আদালত। এরপর রায়ে বদল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের বক্তব্য ছিল, এত শিক্ষকের চাকরি গেলে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। অনেক স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক শূন্য হয়ে যাবে।
গত ১৭ এপ্রিল পর্ষদের ওই আবেদন মেনে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, দাগি অযোগ্যদের বাদ রেখে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। তাঁরা বেতনও পাবেন। ৩১ মে-র মধ্যে রাজ্যকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। যদিও গ্রুপ-সি ও গ্রুপ ডি-র পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ বেশি থাকার কারণে শিক্ষাকর্মীদের আপাতত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়নি কোর্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সকল শিক্ষাকর্মীদের বার্তা দিয়েছিলেন মাসে-মাসে ভাতা দেওয়ার। তবে সেই ভাতার অঙ্ক বাড়ানোর আবেদন করেছেন অশিক্ষক কর্মীরা।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, গত ৩ এপ্রিল এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছিল। আর ৩ মে রিভিউ পিটিশন করতে চেয়ে আবেদন করা হয়। রায় ঘোষণার ঠিক এক মাসের মাথায় রায়ে পরিবর্তন চেয়ে মামলা দায়ের করল রাজ্য এবং এসএসসি। রিভিউ পিটিশনে রাজ্য ও এসএসসির আবেদন, ‘যোগ্য-অযোগ্য’ তালিকা ভালোভাবে যাচাই করে নতুন রায় দেওয়া হোক অথবা আগের রায় আংশিক বদল করা হোক। আগামী ১৩ মে প্রধান বিচারপতি খান্না অবসর নেবেন। তার আগে আগামী বৃহস্পতিবার তাঁর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে।