• পাক নাগরিক হয়েও ভারতের ভোটার তালিকায় নাম! ১৪দিনের জেল হেফাজতে চন্দননগরের বৃদ্ধা...
    ২৪ ঘন্টা | ০৪ মে ২০২৫
  • বিধান সরকার: ভোটার তালিকায় নাম আছে, এতদিন ভোট দিয়েছেন ভারতে! পাক নাগরিক (Pakistani) গ্রেফতারের পর চন্দননগরে শুরু রাজনৈতিক তরজা। নাগরিকত্ব (Indian Citizenship) রয়েছে পাকিস্তানের তবে ভোট দেন ভারতে। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে ভারতেই রয়েছেন পাকিস্তান নাগরিক ফতেমা বিবি। তাঁর  স্বামী ও দুই কন্যা তাঁদের পরিবার রয়েছে। চন্দননগরের (Chandannagar) কুঠির মাঠ এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বিবি (মল্লিক)। তিনি যে ভারতীয় ভোটার তার প্রমাণ রয়েছে নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

    একজন পাকিস্তানের নাগরিক এই দেশের ভোটার কীভাবে হলেন সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক দলগুলো। চন্দননগর পুরো নিগমের ডেপুটি মেয়র মুন্না আগারওয়াল বলেন, ৪৫ বছর আগে এই বিষয়টি খোঁজখবর করা উচিত ছিল। ১৯৮০ সালে আমাদের সরকার ছিল না যারা ছিল তারা বলতে পারবে কিভাবে ভোটার লিস্টে নাম উঠলো। যেহেতু উনি ৪৫ বছর ধরে এখানে সংসার করছেন তাই ট্রাইবুনালে মানবিক দিক থেকে এর মীমাংসা করা হবে। মহিলার কোন অবৈধ কার্যকলাপ নেই,সেই দিক থেকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সরকার বিবেচনা করবে। ১৯৮০ সালে যখন এসেছে বামফ্রন্ট সরকার ছিলো,তারা বলতে পারবে। আধার কার্ড ভোটার কার্ড কর্পোরেশনের কোনো বিষয় না এটা ভারত সরকার এবং নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে।

    সিপিআইএম চন্দননগর এড়িয়া কমিটির সম্পাদক ঐক্যতান দাশগুপ্ত বলেন, আমাদের দেশে ১৯৮৫ সাল থেকে ২০২৫ সাল অব্দি একাধিক সরকারের পরিবর্তন হয়েছে। এটা রাজ্যের কোন বিষয় না।দেশের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের একটা বড় গাফিলতি থেকে গিয়েছে, যা তারা অস্বীকার করতে পারেন না। নিজেদের গাফিলতি রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে হয়না। রাজ্যকে নোটিফিকেশন দিলে সেই অনুযায়ী রাজ্য কাজ করে।একজন মানুষ যে টুরিস্ট ভিসায় আসে এবং তার ভিসা এক্সপায়ার হয়ে যাওয়ার পরেও এতগুলো বছর থেকে গেল এর জবাব তো স্বরাষ্ট্র দপ্তর দেবে। উনি ষাটোর্দ্ধ এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ,সেই দিক থেকে দেখে মানবিকতার বিবেচনা করা দরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কোন মানুষগুলোকে আমরা নির্বাচনের তালিকাভুক্ত করব।

    চন্দননগরের বিজেপি নেতা গোপাল চৌবে বলেন, শুধু চন্দননগর না আশেপাশে উর্দিবাজার, চাঁপদানী, ভদ্রেশ্বর, বিলকুলিতে খুঁজলে অনেক পাক নাগরিক পাওয়া যাবে।এদের সব হয়ে যাচ্ছে এখানে।আধার, প্যান রেশন কার্ড হয়ে যাচ্ছে। আমার আবেদন এদের সকলকে চিহ্নিত করে বের করা দরকার।প্রশাসন এতদিন কি ঘুমাচ্ছিলো? 

    গতকাল চন্দননগর থানা ফতেমা বিবিকে গ্রেফতার করে চন্দননগর আদালতে পেশ করে। তার ১৪ দিনের জেলা হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। ফতেমার পরিবার গতকালই জানিয়েছিল বয়সজনিত কারণে নানা ব্যাধি আছে তার।হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করতে হবে। ওষুধ ছাড়া এক মুহুর্ত চলে না। এই অবস্থায় একজন মানুষ কি করে জেলে থাকবেন।

    স্থানীয় বাসিন্দা ফতেমার প্রতিবেশীরাও সরকারের কাছে আবেদন করছেন,বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা উচিত। প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে একজন মানুষ ভারতে রয়েছেন। তিনি ভোট দেন,অন্যান্য সব ধরনের পরিচয় পত্র রয়েছে যেহেতু আইন মেনে মুজফফর মল্লিকের সঙ্গে তার বিবাহ হয়েছিল। তাদের দুজনের সন্তান সন্ততি আছে। এখন ওই মহিলাকে পাকিস্তান ফেরত পাঠালে সে যাবে কার কাছে। তার তো পাকিস্তানে কেউ নেই।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)