চাইলেও বাবা মোবাইল দেননি, অভিমানে নিজেকে শেষ করে দিল আলিপুরদুয়ারের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ...
আজকাল | ০৫ মে ২০২৫
প্রকাশ মণ্ডল, আলিপুরদুয়ার: বাবাক কাছ থেকে মোবাইল ফোন চেয়েছিল অষ্ঠম শ্রেণির ছাত্রী। কিন্তু, বাবা তা দিতে অস্বীকার করেছিলেন। তাতেই অভিমান হয় ১৪ বছরের মেয়েটির। শেষমেষ আত্মঘাতী হয় সে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লক জংশন পল্লীমঙ্গল ক্লাব এলাকায়। আত্মঘাতী ছাত্রী নন্দিতা রায় কর্মকার নেতাজি বিদ্যাপীঠ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে সুনন্দিতা সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের কাজ সেরে বাবার কাছে তার মোবাইল ফোনটি চেয়েছিলয। কিন্তু বাবা সুবোধ রায় কর্মকার তখন মেয়েকে মোবাইল ফোন দিতে অস্বীকার করেন। বাবা মানা করায় সুনন্দিতা নিজের কাজে ফিরে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল।
ঘটনার সময় সুনন্দিতার মা ঠাকুর পুজো দিচ্ছিলেন। দাদা এবং ঠাকুমা ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। আনুমানিক সকাল ১০টা নাগাদ মা পুজো সেরে ঘরে এসে দেখেন সুনন্দিতা একটি ঘরে নিজেকে বন্ধ করে রেখেছে। অনেক ডাকাডাকির পরও সাড়া না মেলায় বাড়ির সকলকে ডাকেন ছাত্রীটির মা। ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকতেই সকলে দেখেন, সুনন্দিতা ঘরের সিলিংয়ে গলায় গামছা বাধা অবস্থায় ঝুলছে।
তড়িঘড়ি সুনন্দার বাবা এবং দাদা গলার গামছা খুলে তাকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
আত্মায়ী ও প্রতিবেশীদের কথায়, পরিবারে কোনওরকম অশান্তি ছিল না। পরিবার এবং এলাকার প্রত্যেকে সুনন্দিতা'কে স্নেহ করত। তবে এই সামান্য বিষয় নিয়ে সুনন্দা এমন একটি হটকারী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না।
এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার নেতাজি বিদ্যাপীঠ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষক ত্রিদিপেশ তালুকদার বলেন, "একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ছাত্রীর এরকম মৃত্যু সত্যিই হৃদয় বেদনাদায়ক। বর্তমান শিক্ষা প্রেক্ষাপটে মোবাইলের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। এটা সত্যি যে, আমরা নিজেদের এমনভাবে মোবাইলে আত্মমগ্ন করে তুলছি যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা খুবই শক্ত। তবে শিশুদের মোবাইল দিলে কীভাবে তাদেরকে আমরা ম্যানেজ করব, তাই নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা রয়েছে। শিশুমনে নানান রকম মান অভিমান থাকে। যদিও স্কুলে পড়ার সময় ওকে দেখে তেমন কোন ইঙ্গিত আমরা পাইনি। এটা আমাদেরই ব্যর্থতার ওকে আমরা সঠিক পথ দেখাতে পারিনি।"
এদিকে সুনন্দিতার মৃত্যুর কারণ খুঁজতে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে তার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করিয়েছে পুলিশ।