১৯৮০ সালে টুরিস্ট ভিসায় পাকিস্তান থেকে ভারতে, ৪৫ বছর ধরে ভোট দিচ্ছেন চন্দননগরের ফতেমা বিবি...
আজকাল | ০৫ মে ২০২৫
মিল্টন সেন
ভারতের নাগরিকত্ব নেই। অথচ নাম রয়েছে ভোটার তালিকায়। টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ১৯৮০ সালে পাকিস্তান থেকে এসেছিলেন ভারতে। তারপর আর ফেরেননি। চন্দননগরের কুঠির মাঠ এলাকার বাসিন্দা ফতেমা বিবি মল্লিকের নাগরিকত্ব রয়েছে পাকিস্তানের।
অথচ টানা ৪৫ বছর ধরে তিনি ভারতে রয়েছেন। ভোটও দিয়েছেন। চন্দননগরে রয়েছে তাঁর স্বামী ও দুই কন্যা। পাকিস্তানের নাগরিক হয়ে কীভাবে এত বছর ধরে ভারতে ভোট দিচ্ছেন সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে একাধিক রাজনৈতিক দল।
পাক নাগরিক গ্রেপ্তারের পর চন্দননগরে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। রবিবার চন্দননগর পুরো নিগমের ডেপুটি মেয়র মুন্না আগারওয়াল বলেছেন, ৪৫ বছর আগে খোঁজখবর করা উচিত ছিল। ১৯৮০ সালে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ছিল না। তখন যারা ছিল তারা বলতে পারবে। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এগুলো কোনওটাই কর্পোরেশনের বিষয় নয়। এই বিষয়গুলো ভারত সরকার এবং কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে।
পাল্টা চন্দননগর এড়িয়া কমিটির সিপিআইএমের সম্পাদক ঐক্যতান দাশগুপ্ত এই দায় চাপিয়েছেন কেন্দ্রের ওপর। তাঁর দাবি, এটা রাজ্যের কোনও বিষয় না। দেশের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের একটা বড় গাফিলতি থেকে গিয়েছে, যা তারা অস্বীকার করতে পারেন না। একজন মানুষ যে টুরিস্ট ভিসায় আসে এবং এত বছর থেকে যায় তার জবাব তো কেন্দ্র দেবে।
চন্দননগরের বিজেপি নেতা গোপাল চৌবে জানান, ‘শুধু চন্দননগর না আশেপাশে উর্দিবাজার, চাঁপদানী, ভদ্রেশ্বর, বিলকুলিতে খুঁজলে অনেক পাক নাগরিক পাওয়া যাবে। এদের আধার, প্যান রেশন কার্ড সবই রয়েছে’। সরকারের কাছে তিনি আবেদন করেছেন, সকলকে চিহ্নিত করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া দরকার।
উল্লেখ্য, শনিবার চন্দননগর থানার পুলিশ ফতেমা বিবিকে গ্রেপ্তার করে চন্দননগর আদালতে পেশ করে। তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ফতেমার পরিবার এবং প্রতিবেশীদের দাবি, সরকারের এই গোটা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা উচিত। প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে একজন মানুষ ভারতে রয়েছেন। তিনি ভোট দেন। তাঁদের সন্তান রয়েছে। ফতেমার তো পাকিস্তানে কেউ নেই, ফেরত পাঠালে তিনি যাবেন কোথায়?