মাধ্যমিক শুরুর আগে পিতৃহারা, ৬৩৭ নম্বর পেয়েও বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে অর্থনৈতিক বাধার সম্মুখীন হাওড়ার স্নেহা...
আজকাল | ০৫ মে ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাঁচ বছর ধরে শয্যাশায়ী বাবা। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর মাসখানেক আগে হঠাৎই পিতৃহারা হয় হাওড়ার হানিধারা গ্রামের বাসিন্দা স্নেহা দাস। তারপরেও হার না মেনে মাধ্যমিকে ৬৩৭ নম্বর পেয়ে মায়ের কষ্টের মর্যাদা রাখল সে। কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা ও ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর স্নেহাকে বাধ সেধেছে পরিবারের অর্থনৈতিক দুরবস্থা। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
বাড়িতে থাকা মেজ মেয়ে প্রতিবন্ধী। ছোট ছেলে এইটে পড়ে। এই অবস্থায় ছোট মেয়েকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াবেন কী করে তা নিয়ে ভাবতে ভাবতে চিন্তায় ঘুম উড়েছে মা শ্যামলী দাসের। স্নেহা এবার থলিয়া ইউনিয়ন হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিল। ৬৩৭ নম্বর পেয়ে স্কুল ও জেলার মেধাতালিকায় জায়গা করে নিলেও স্নেহার লড়াই ছিল বাকি পড়ুয়াদের থেকে অনেকটাই আলাদা।
স্বামী চাঁদু দাসের ছিল লন্ড্রির দোকান। ওই দোকান চালিয়ে স্বামীর ওষুধ সহ ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন শ্যামলী দেবী। মায়ের কষ্ট সামনে থেকে দেখেছে ছোট মেয়ে স্নেহা। কিন্তু এবার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা এগোতি গিয়ে সম্মুখীন হতে হচ্ছে আর্থিক বাধার।
স্নেহা বলেন, ‘বাবা আমাকে সর্বদা সাহস জুগিয়েছেন। সেই মানুষটা পরীক্ষার এক মাস আগে মারা যান। এক বুক কষ্ট নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। পড়াশোনা করে ভাল রেজাল্ট করতেই হত। সেটাই করেছি। বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছি। কীভাবে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ব এটাই এখন চিন্তার। স্কুলের শিক্ষক, এলাকার মানুষজন পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন’।
স্নেহার মা শ্যামলী দেবী বলেন, ‘মেয়ে চিকিৎসক হতে চায়। কিন্তু আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। এতগুলো মানুষের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সংসার চালিয়ে মেয়ের পড়াশোনা কী করে করাব তা ভাবতে গিয়ে চিন্তায় ঘুম উড়েছে’।