• পদবি নয়, শুধুই নাম... বৈষম্যবিরোধী ভাবনায় নতুন প্রজন্মের নিশান 'প্রথমা' সৃজনী...
    ২৪ ঘন্টা | ০৫ মে ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ২০২৫ সালের আইএসসি পরীক্ষায় (ISC Exam Result 2025) ৪০০এয় ৪০০ পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন কলকাতার মেয়ে সৃজনী (Srijani, ISC Topper)। হ্যাঁ, তাঁর নামের সঙ্গে নেই কোনও পদবি। শুধু নামেই পরিচিত হতে চান তিনি। কোনও পদবি রাখতে চাননি সৃজনী। কারণ তাঁর মনে হয় পদবির সঙ্গে যুক্ত থাকে ধর্ম, জাতির পরিচয়। আর ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ সহ সামাজিক কোনও বৈষম্যই পছন্দ নয় তাঁর। বৈষম্যবিরোধীতাতেই নিজের পদবি বাদ দিয়েছেন সৃজনী। বছর ১৭-র মেয়ের চিন্তাধারায় মুগ্ধ গোটা দেশ। 

    দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের ছাত্রী সৃজনী তাঁর বোর্ড পরীক্ষায় কেবল তাঁর প্রথম নাম দিয়ে রেজিস্টার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, পাশে পেয়েছিলেন পরিবার ও স্কুলকে। তিনি বিশ্বাস করেন যে পদবি সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস এবং বিভাজনের একটা অংশ।

    শনিবার পিটিআইকে শ্রীজনী বলেন, "একজন ব্যক্তি হিসেবে, এটা আমার সিদ্ধান্ত ছিল - আমার বাবা-মা এবং বোনের সমর্থন পেয়েছি। আমি এমন একটি সমাজে বিশ্বাস করি যা জাতি, লিঙ্গ, ধর্ম এবং অর্থনৈতিক অবস্থার বাইরে গিয়ে বিভাজনের ঊর্ধ্বে। আমার কাছে, পদবি কোন ব্যাপার না। আমি সবসময় আমার বন্ধুবান্ধব এবং প্রিয়জনদের কাছে আমার প্রথম নাম দিয়ে পরিচিত। পদবির বোঝা বহন করার কারণ কী? আমি ভাগ্যবান যে আমার পরিবারের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছি।"

    শ্রীজনীর বাবা-মা, দুজনেই অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরাও বৈষম্য বিরোধী। তাঁর বাবা, দেবাশিস গোস্বামী, যিনি ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং তাঁর মা, গুরুদাস কলেজের সহকারী অধ্যাপক গোপা মুখোপাধ্যায়। পিতৃতান্ত্রিক এবং বর্ণ-ভিত্তিক পক্ষপাতমুক্ত সমাজের আশায় তাঁদের মেয়েদের জন্মশংসাপত্রে পদবি যোগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা।

    পড়াশোনার পাশাপাশি, সৃজনী সামাজিক নানা বিষয়ে সরব। আরজি কর মেডিকেল কলেজের মর্মান্তিক ঘটনার পর নারীদের নিরাপত্তার আহ্বান জানিয়ে তিনি 'রিক্লেইম দ্য নাইট' আন্দোলনের সময় পথে নেমেছিলেন তিনি। পড়াশোনার ব্যস্ত সময়সূচী সত্ত্বেও, ন্যায়বিচারের আশায় সহ-নাগরিকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বছরের ১৭-র মেয়েটি। 

    আগামীদিনে গবেষণা করার স্বপ্ন দেখেন সৃজনী এবং বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি) তে পদার্থবিদ্যা বা গণিতে তাঁর পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চান সৃজনী। শুধু বুদ্ধিবৃত্তির  উৎকর্ষতা নয়, সেই পড়াশোনা সামাজিক ন্যায়বিচারের সঙ্গে মিলিয়ে প্রচলিত নিয়মগুলিকে ভেঙে আরও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যত গঠন করাই সৃজনীর লক্ষ্য। 

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)