একের বদলা এক! ভারতে পাক সেনা গ্রেপ্তার হতেই স্বামীর মুক্তি নিয়ে আশা পূর্ণমের স্ত্রীর
প্রতিদিন | ০৫ মে ২০২৫
সুমন করাতি, হুগলি: এক এক করে কেটে গিয়েছে ১২ দিন। কোনও খবর নেই বিএসএফে কর্মরত জওয়ান স্বামীর। ‘ভুল’ করে সীমান্ত পেরিয়ে পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া জওয়ানকে আটকে রেখেছে পাক রেঞ্জার্সরা, এমনই খবর মিলেছিল। খোঁজ নিতে স্বামীর কর্মস্থল পাঠানকোটে গিয়েছিলেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। কিছুটা হতাশ হয়েই হুগলির বাড়িতে ফিরে এসেছেন স্ত্রী। কিন্তু ফেরার পরই স্বামী পূর্ণম কুমার সাউয়ের মুক্তি নিয়ে আশার আলো দেখছেন স্ত্রী রজনী। কারণ একটাই। ওদিকে যেমন পূর্ণমকুমার পাক রেঞ্জার্সের হাতে ‘বন্দি’, তেমনই সীমান্ত পেরিয়ে এপারে বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক পাক সেনা। তাই একের বদলে এক ? ফর্মুলায় এবার পূর্ণমকে ছেড়ে দিতে পারে পাকিস্তান, মনে করছেন রজনী সাউ।
শনিবার বিএসএফ সূত্রের খবর, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক পাক সেনা। অভিযোগ, সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে বিএসএফকে রীতিমতো গালিগালাজ করে ওই রেঞ্জার্স। তাই বিএসএফ গ্রেপ্তার করেছে তাকে। এই খবর ওপারে পৌঁছতেই শোরগোল শুরু হয়। সূত্রের খবর, পাক সেনাকে ছাড়াতে শনিবারই ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে বসেছিল দুই দেশের সেনা। সেখানে পাকিস্তানের তরফে ওই জওয়ানের মুক্তির দাবি করা হয়। যদিও তাদের দাবিতে আমল দেয়নি বিএসএফ।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পাক মুলুকে ‘আটক’ বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের পরিবারের বক্তব্য, পাকিস্তান রেঞ্জার্সের সদস্য বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তারির পর, এবার হয়ত পূর্ণমকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবে সেই দেশ। ১২ দিন ধরে পাকিস্তানে রয়েছেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। জওয়ানকে ছাড়ানোর ব্যাপারে পাকিস্তানের সঙ্গে বার বার ফ্ল্যাগ মিটিং করে ভারত। তবে তাঁকে ছাড়ার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও সদিচ্ছা দেখায়নি শেহবাজ শরিফ প্রশাসন।
পূর্ণমের স্ত্রী রজনী সাউ অন্তঃসত্ত্বা। এই শারীরিক অবস্থাতেও স্বামীর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে সম্প্রতি পাঠানকোট গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বিএসএফ-এর সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। তিনি জানান, পূর্ণমকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সবরকম চেষ্টা চলছে বলে বিএসএফের তরফে তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়। কয়েকটা দিন ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে। পূর্ণমের স্ত্রী জানিয়েছেন, ১২ দিন কেটে গেলেও তাঁদের কাছে কোনও খবর আসেনি। কিন্তু শনিবার বিএসএফের হাতে পাক রেঞ্জার্সের আটক হওয়ার খবর শুনে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন তিনি। রজনী মনে করছেন, এবার হয়ত নিজেদের দেশের সেনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পূর্ণমকে ভারতের হাতে তুলে দেবে পাকিস্তান। এর আগে ৭-৮ বার ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে যে কাজ হয়নি, নিজেদের স্বার্থে এবার হয়ত পাকিস্তান নিজেই এগিয়ে আসবে। সাড়া দেবে। কারণ, এ বার তাদের স্বার্থ রয়েছে। এখন পূর্ণমের ফেরার অপেক্ষায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী।