• আদিবাসী ছাত্র সঞ্জয় ইংরেজি মাধ্যমে মাধ্যমিক দিয়ে পেল ৮৪ শতাংশ
    বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা মালদহ: ইংরেজি মাধ্যমে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ৫৮৭ বা প্রায় ৮৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে চমকে দিয়েছে প্রথম প্রজন্মের আদিবাসী ছাত্র সঞ্জয় হাঁসদা। মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের পিরিজপুর গ্রামের আর্থিকভাবে চরম অনগ্রসর এই কিশোর। মিশনের প্রধান শিক্ষক স্বামী তাপহরানন্দজী এবং সম্পাদক স্বামী ত্যাগরূপানন্দজী মহারাজ নিখরচায় সঞ্জয়ের সবরকম সাহায্যের ব্যবস্থা করেছিলেন। এই কৃতী কিশোরকে রাখা হয়েছিল স্কুলের হোস্টেলেই। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক সঞ্জয়ের পাশের গ্রামের বাসিন্দা সাবিনা খাতুনই মিশনের সন্ন্যাসীদের অনুরোধ করে তার লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। 

    সাবিনাদের পরিবারে কৃষি-সহায়ক হিসাবে কাজ করতেন সঞ্জয়ের বাবা গুরভা হাঁসদা। মা সরস্বতী সাহায্য করতেন স্বামীকে। তাঁদের বংশে কেউ কখনও লেখাপড়া করেননি। কিন্তু সাবিনা কার্যত জোর করে সঞ্জয়কে নিয়ে আসেন লেখাপড়ার দুনিয়ায়। প্রথমে একলব্য বিদ্যালয় ও পরে রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত স্কুলে পড়ে মাধ্যমিকের ফলাফলে সকলকে চমকে দিয়েছে এই কিশোর। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনে একাদশের প্রবেশিকা পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। বর্তমানে সঞ্জয় সেখআনে বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া।

    সাবিনা বলেন, সঞ্জয়ের এই সাফল্য অনেকটা রূপকথার মতো। ও আমাকে পিসি বলে ডাকে। ওর এই কৃতিত্ব আমার জীবনকে সার্থক করে তুলেছে। সঞ্জয়ের জীবনের যাত্রাপথে সব সময় ওর পাশে আছি। রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা পাশে না থাকলে একটি মেধার বিকাশ অধরা থেকে যেত।

    স্বামী তাপহরানন্দজী বলেন, সঞ্জয়ের এই সাফল্য আমাদের বিহ্বল করেছে। আমরা ওকে নিয়ে আপ্লুত।

    আর মুখচোরা সঞ্জয় পুরুলিয়া থেকে ফোনে বলে, আমার মা, বাবা, পিসি আর রামকৃষ্ণ মিশন - এই আমার জগত্। চিকিৎসক বা বিজ্ঞানী হয়ে সমাজের এই সাহায্যের প্রতিদান দেওয়াই আমার লক্ষ্য।  সঞ্জয় হাঁসদা।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)