• সম্প্রীতির নজির, রায় পরিবারের মেয়ের বিয়েতে ‘মুশকিল আসান’ রবিউল ইসলাম
    বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: সম্প্রীতির নজির জলপাইগুড়িতে। ময়নাগুড়ির দোমোহনির লক্ষ্মীরহাটের দিনমজুর রায় পরিবারের মেয়ের বিয়েতে ‘মুশকিল আসান’ রবিউল ইসলাম। পাত্রী প্রিয়াঙ্কা রায়ের বাবা শিবু রায়। এলাকার একটি কাঠ চেরাই মিলে কাজ করতেন। মাস ছ’য়েক আগে দুর্ঘটনায় করাতে তাঁর বাঁ হাত কাটা যায়। তারপর থেকে কার্যত বেকার হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন তিনি। শিবুবাবুর বয়স হলেও সংসার টানতে রিকশ চালান। কখনও পাহাড়ি নদী থেকে পাথর কুড়িয়ে বিক্রি করে কিছু আয়ের চেষ্টা করেন। এসব দিয়েই তাঁদের ছ’জনের সংসার চলে। ঘরে অভাব নিত্যসঙ্গী। ফলে জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ির বাসিন্দা ফণীন্দ্রনাথ দাসের সঙ্গে মেয়ের বিয়েতে সবটা জোগাড় করে উঠতে পারেননি শিবু। আর সেই খবর পেয়েই কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার পাশে দাঁড়ালেন রবিউল। প্রিয়াঙ্কার বিয়ের বেনারসি থেকে কনে সাজানোর সামগ্রী সহ আমন্ত্রিতদের খাওয়ানোর চাল-ডাল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। রবিউলের এই মহতী উদ্যোগে যারপরনাই খুশি পাত্রীর পরিবার।

    রবিবার ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। তারই প্রস্তুতির ফাঁকে পাত্রী প্রিয়াঙ্কার মা সনেকা রায় বলেন, খুবই অভাবের মধ্য দিয়ে দিন কাটে আমাদের। মেয়ে প্রিয়াঙ্কা কলেজ পর্যন্ত পড়েছে। তারপর আর পড়াতে পারিনি। বেরুবাড়ির পাত্র কোনওরকম দাবিদাওয়া ছাড়াই মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হয়। অনেক কিছু দিয়ে রবিউল আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই আমাদের।

    যদিও বাহবা পাওয়ার মতো কোনও কাজ তিনি করেননি বলে মনে করেন রবিউল। তাঁর কথায়, জাত-ধর্ম বুঝি না। শুধু এটুকু বুঝি, আমরা মানুষ। আর মানুষ হিসেবেই কন্যাদায়গ্রস্ত একজন পিতার পাশে দাঁড়িয়েছি।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)