চতুর্থ আফরিদা, ষষ্ঠ সামিমের ডাক্তার হওয়ার পথে বাধা দারিদ্র
বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
উমর ফারুখ, হরিশ্চন্দ্রপুর: হাই মাদ্রাসায় চতুর্থ ও ষষ্ঠ স্থান দখল করে নজর কেড়েছে মালদহের গাজোলের রামনগর হাই মাদ্রাসার আফরিদা বানু (৭৭১) ও সামিম আকতার (৭৬৯)। দুই কৃতী বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করে চিকিৎসক হতে চায়। কিন্তু পরিবারের দারিদ্র তাদের স্বপ্ন পূরণে অন্তরায়। উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিতে অভিভাবকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
রতুয়া-২ ব্লকের শ্রীপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিনগর গ্রামের আফরিদা দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে ৯৬ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। বাংলা, জীবন বিজ্ঞানে ৯৫, ইংরেজিতে ৮৯, গণিতে ৯৮, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৭, ইতিহাস, ভূগোল ও ইসলাম পরিচয়ে ৯৯, ঐচ্ছিক আরবিতে ৬৮ নম্বর। পেয়েছে সে। বাবা সফিকুল ইসলাম চাষবাস করে কোনওরকমে সংসার চালান। মা শেফালি বিবি গৃহবধূ। আফরিদা চার ভাইবোনের মধ্যে বড়। আফরিদা বলে, আমার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া। বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার জন্য অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু বাবার আর্থিক সঙ্গতি নেই। উচ্চশিক্ষা নিয়ে চিন্তায় আছি।
গাজোলের বৈরগাছি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কুতুবপুর গ্রামের দিনমজুরের ছেলে সামিম ষষ্ঠ হয়ে চমক দিয়েছে। সে বাংলায় ৯২, ইংরেজিতে ৯০, গণিত, ইসলাম পরিচয়ে ৯৯, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৫, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৬, ভূগোলে ১০০, ঐচ্ছিক আরবিতে ৮৪ নম্বর পেয়েছে। তার বাবা আশরাফুল হক অন্যের জমিতে কাজ করেন। আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও তিন ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। বড় ছেলে কলেজ পড়ুয়া। মেজ ছেলে সামিম চিকিৎসক হতে চায়। ছোট ছেলে নবম শ্রেণির পড়ুয়া। সামিম বলে, বাবা অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালানোর পর খুব কষ্টে করে আমাদের পড়াচ্ছেন। এই অবস্থায় বিজ্ঞান নিয়ে কীভাবে পড়ব, বুঝতে পারছি না।
এই অভাবী মেধাবীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। তিনি বলেন, অর্থের অভাব উচ্চশিক্ষা অর্জনে বাধা হবে না। তাদের পড়াশোনার জন্য রাজ্য সরকার সাহায্য করবে। নিজস্ব চিত্র।