• মা পরিচারিকা, আর্থিক বাধা পেরিয়ে মাধ্যমিকে ৬৭২ রুবির
    বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: পরিবারে অভাব নিত্যসঙ্গী। পরিচারিকার কাজে মায়ের সামান্য রোজগারে কোনওক্রমে ভাড়া বাড়িতে চলে তিনজনের সংসার। তবে অদম্য জেদ, ইচ্ছাশক্তির জোরে আর্থিক প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে মাধ্যমিকে নজরকাড়া রেজাল্ট করেছে কোচবিহার ২ ব্লকের রাজারহাট হাইস্কুলের রুবি কর। প্রাপ্তনম্বর ৬৭২। রুবি বাংলায় ৯৩, ইংরেজিতে ৯৫, ভূগোলে ১০০, ইতিহাসে ৯৩, অঙ্ক ৯৭, জীবন বিজ্ঞানে ৯৭ এবং ভৌত বিজ্ঞানে ৯৭ পেয়েছে। চার এই অভাবনীয় সাফল্যে খুশি রাজারহাট হাইস্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে শুরু করে তার পরিবারও। দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রীটি চিকিৎসক হয়ে মানব সেবায় ব্রতী হতে চায়।  

    মা ঝুমা কর দুই মেয়েকে নিয়ে স্কুলের পাশে একটি ঘর ভাড়া করে থাকেন। পরিচারিকার কাজ করে সামান্য রোজগার দিয়ে কোনওরকমে সংসার চালান। আগামীদিনে মেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াশুনার খরচও বাড়বে। সে নিয়েই ঘুম উবে গিয়েছে রুবির মায়ের। মেয়ের পড়াশোনায় সরকারিভাবে বা কোনও সংস্থা সাহায্য করুক, চাইছেন ঝুমা। যদিও এমন সাফল্যের পিছনে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের অবদানও যে কম নয় তা অকপটে স্বীকার করেছেন রুবি ও তার মা। পড়াশোনার জন্য বই, খাতার পাশাপাশি প্রাইভেট টিউশনের ব্যবস্থাও বিনামূল্যে স্কুলের শিক্ষকরা করে দিয়েছিলেন রুবিকে। 

    রুবির মা বলেন, পরিচারিকার কাজ করে দুই মেয়েকে পড়ানোর চেষ্টা করছি। পরিবারের আর্থিক অভাব অনটনের মধ্যেও মেয়ে এমন এই সাফল্যে পেয়েছে। মেয়ে ডাক্তার হতে চায়। কিন্তু, আমার তো সাধ্য নেই। সরকারি সাহায্য পেলে ভালো হয়। 

    কৃতী ছাত্রী রুবি বলে, ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা। জানি না শেষ পর্যন্ত কতদূর যেতে পারব। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা সহযোগিতা করেছে বলে ভালো ফল করতে পেরেছি।

    এই ব্যাপারে রাজারহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীর রক্ষিত বলেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে রুবি উঠে এসেছে। শিক্ষকরাও তাকে সাধ্যমত সাহায্য করেছেন।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)