জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী, বাঁ হাতে লিখে বাজিমাত মাধ্যমিকে ৭০ শতাংশ নম্বর নাদনঘাটের সপ্তপর্ণার
বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, কালনা: জন্ম থেকেই নার্ভের অসুখের জেরে প্রতিবন্ধী। ছোট থেকেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে মাধ্যমিকে ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে নাদনঘাটের জাহান্নগর কুমারানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সপ্তপর্ণা দেবনাথ। তার এই সাফল্যে খুশি বাবা-মা ও স্কুলের শিক্ষকরা।নাদনঘাট থানার চাঁদপুরের বাসিন্দা শিক্ষক অমরেশ দেবনাথ ও যূথিকাদেবীর একমাত্র মেয়ে সপ্তপর্ণা। জন্ম থেকেই সে সেরিব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত। চলাফেরায় অক্ষম। প্রথমে দু’টি হাতে জোর পেত না সপ্তপর্ণা। পরবর্তীতে বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে ফিজিওথেরাপি করিয়ে বাঁ হাতের শক্তি কিছুটা ফিরে পায় সে। সেই হাতে কলম ধরেই শুরু হয় শিক্ষার অঙ্গনে প্রবেশ। সপ্তপর্ণা স্থানীয় জাহান্নগর কুমারানন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। সে ৪৯০ নম্বর পেয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তার এমন সাফল্যে খুশি সকলেই। পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তপর্ণা আবৃত্তি ও গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে।
মা যূথিকাদেবী বলেন, মেয়ের শারীরিক সমস্যা থাকায় অধিকাংশ সময়ই ওকে চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হয়েছে। পড়াশোনার জন্য চাপ দেওয়া হয় না। ও বাঁ হাতে লেখে। পরীক্ষায় আমরা রাইটার নেওয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু ও রাজি হয়নি। নিজেই বাঁ হাতে লিখে পরীক্ষা দিয়েছে। মেয়ের অদম্য ইচ্ছাশক্তির কথা বলতে গিয়ে চোখে জল আসে যূথিকাদেবীর। তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার আগে অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করত। ওর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। র্ও সাফল্যে আমরা খুব খুশি। সপ্তপর্ণা বলে, আমার সাফল্যের জন্য বাবা-মা ও শিক্ষকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে আমি শিক্ষক হওয়ার লক্ষ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। জাহান্নগর কুমারানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপাল মণ্ডল বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও জেদ ও অধ্যবসায় সপ্তপর্ণাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। আমরা মনে করি, শারীরিকভাবে সক্ষম এমন পড়ুয়াদের কাছে ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা ওর সাফল্যে খুশি।