• মোবাইল আসক্তিতেই ফেল ১৫ শতাংশ ছাত্রী
    বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানে এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি ছিল। পড়াশোনার ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে, পিছনে ফেলে দিচ্ছে ছেলেদের— এরকম আলোচনা শুরু হয়েছিল শিক্ষামহলে। কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্টে সব উল্টে গেল। ফলাফলে মেয়েরা টেক্কা দিতে পারল না ছেলেদের। পরীক্ষায় বসা প্রায় ১৫ শতাংশ ছাত্রী অকৃতকার্য হয়েছে। মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়াতেই কি পিছিয়ে পড়ল ছাত্রীরা— এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ময়দানে নামছে শিক্ষাদপ্তর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মোবাইলে আসক্ত হয়ে ছাত্রদের তুলনায় বেশি সংখ্যক ছাত্রী পড়াশোনায় ইতি টেনেছে। নাবালিকাদের বিয়ে করার প্রবণতাও বেড়েছে। সেই কারণে কন্যাশ্রীদের নিয়ে ‘মর্ডান কেরিয়ার’ ক্লাস করানো হচ্ছে। ছাত্রীদের ড্রপ আউট কমাতে স্কুলগুলিতে কর্মশালা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে। তার মাঝেই প্রায় ১৫ শতাংশ ছাত্রী অকৃতকার্য হওয়ায় আধিকারিকদের মাথাব্যথা বেড়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২৩ হাজার ৮৭১ ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। ২৩ হাজার ৮৭৫ ছাত্রী রেজিস্ট্রেশন করেছিল। চারজন পরীক্ষায় বসেনি। পাশাপাশি ১৮ হাজার ৯৪৬ জন ছাত্র পরীক্ষা দেয়। তার মধ্যে ৯০.৬৯ শতাংশ ছাত্র পরীক্ষায় সফল হয়েছে। ছাত্রীরা সেই তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। তাদের সাফল্যর হার ৮৫.২৯ শতাংশ। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, ছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী সহ বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। ছাত্রীদের মধ্যে পড়াশোনা করার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু স্কুলের ভর্তির পর অনেকেই মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিচ্ছে। ড্রপ আউট বন্ধ করার জন্য নানা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। অনেক পড়ুয়াকে আবার স্কুলে ফেরানো হয়েছে। মাধ্যমিকে ১৫ শতাংশ ছাত্রী কেন সফল হতে পারল না তা খতিয়ে দেখা হবে। মোবাইলের কুফল পড়ছে ছাত্রীদের জীবনে। অনেকেই মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়াশোনায় অমনযোগী হয়ে পড়ছে। 

    শিক্ষাদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের দু’জন ছাত্রী রাজ্য ভিত্তিক মেধা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। অন্যদিকে সেই তালিকায় রয়েছে চারজন ছাত্র। গ্রামীণ এলাকার ছাত্ররা এবার নজর কেড়েছে। কেতুগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার এক ছাত্র চতুর্থ হয়েছে। মেধা তালিকাতেও জেলায় ছাত্রীরা পিছিয়ে রয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের শিক্ষাদপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোনার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রকল্প চালু করার পর ছাত্রীদের মধ্যে পড়াশোনা করার প্রবণতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড থেকে লোন নিয়ে অনেকে উচ্চশিক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু করোনার পর থেকে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রীদের অনেকের মধ্যেই মোবাইল আসক্তি বেড়ে গিয়েছে। তার প্রভাব পড়াশোনাতেও পড়ছে। সেই কারণেই হয়তো মাধ্যমিকে ১৫ শতাংশ ছাত্রী সফল হতে পারনি। তবে অন্য কারণও থাকতে পারে। সেসব খতিয়ে দেখা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)