পণ্য ও যাত্রী পরিবহণে বেপরোয়া ছুটছে বেআইনি মোটর ভ্যান, ঘটছে বহু দুর্ঘটনা
বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, সিউড়ি: জেলাজুড়ে বিভিন্ন জাতীয় ও রাজ্য সড়কে বেপরোয়াভাবে ছুটছে বেআইনি মোটর ভ্যান। শুধু পণ্য পরিবহণই নয়, গ্রামাঞ্চলের রাস্তায় যাত্রী পরিবহণেও এই গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। জেলা পরিবহণ দপ্তরের অধীনে এই সব গাড়ির অনুমোদন না থাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়লে সমস্যায় পড়ছে পুলিস প্রশাসন। কারণ এই সব গাড়ির চালকের না আছে ড্রাইভিং লাইসেন্স, না আছে গাড়ির কোনও অনুমোদন। অথচ অবাধে এই গাড়িগুলি ছুটে চলছে জনবহুল এলাকার মধ্য দিয়ে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি জাতীয় সড়কগুলিতে এই গাড়িতে বালি ও পাথর বহন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর জেরে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পুরনো মোটর সাইকেল বা শ্যালো পাম্পের ইঞ্জিনগুলিকে এই গাড়ি তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। আগে পায়ে চালানো ট্রলি গাড়ির মধ্যে এই মোটর বা ইঞ্জিন লাগানো হতো। কিন্তু এখন বেশি পণ্য পরিবহণের জন্য বড় আকারে কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। তাতে ট্রাক্টরের মতো চারদিক ঘেরা ডালা তৈরি করে বালি, পাথর, মাটি পরিবহণ করা হচ্ছে। এছাড়াও আগে এই সব গাড়িতে একটি করে হ্যান্ডেল ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন পুরনো গাড়ির স্টিয়ারিং এই সব গাড়িতে লাগানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বীরভূমের প্রতিটি জায়গায় এটি ‘ভটভটি গাড়ি’ নামে পরিচিত। এই গাড়ি রাজ্য ও জাতীয় সড়কে বেপরোয়াভাবে চলছে। মূলত ডিজেলের সাহায্যেই এই গাড়িগুলি চলছে। জানা গিয়েছে, শহর ও গ্রামাঞ্চলে ধান, গম, চাল পরিবহণের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য পরিবহণে এই গাড়িগুলি খুবই ব্যবহার করা হচ্ছে। কম খরচে প্রচুর পণ্য এক সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, গ্রামাঞ্চলের রাজ্য সড়কগুলিতে এই গাড়িগুলি যাত্রী পরিবহণের কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। শহরাঞ্চলের শ্রমিকরা দিনের শেষে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় এই গাড়ি গুলিতেই যাতায়াত করছেন। গাড়িগুলির নিয়ন্ত্রণ খুবই কম হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। তাছাড়া গাড়িগুলির কোনও সরকারি অনুমোদন নেই। চালকদেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। ফলে এই গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে আইনি ব্যবস্থা নিতেও পুলিসকে সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া চালকের লাইসেন্স না থাকার কারণে দুর্ঘটনার পর ক্ষতিপূরণও দাবি করা যায় না। অথচ জেলা পুলিস ও পরিবহণ দপ্তরের উদাসীনতায় বেপরোয়াভাবে রাস্তায় চলছে এই মোটর ভ্যানগুলি। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, সরকারিভাবে এইসব গাড়ির কোনও অনুমোদন নেই। তাই দুর্ঘটনা হলে কেস করা যায় না। এটা শুধু বীরভূমে নয়, গোটা রাজ্যেই চলছে। তাই এই গাড়ি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ করা দরকার। -নিজস্ব চিত্র