নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মেছুয়া বাজার, সল্টলেক, নিউটাউনের পর এবার অগ্নিকাণ্ড বেহালার জেমস লং সরণিতে! ভরদুপুরে একটি পাঁচতলা বহুতলের ফ্ল্যাটে আগুন লাগে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। তীব্র আতঙ্কে ফ্ল্যাট ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। সেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। দমকল কর্মীদের প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে অগ্নিকাণ্ডের জেরে কোনও হতাহতের খবর নেই।
জেমস লং সরণির প্রায় উপরেই বনমালী ঘোষাল লেন। প্রথম বাড়িটাই উর্বশী অ্যাপার্টমেন্ট। এদিন বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ আচমকাই বাড়ির সবচেয়ে উঁচু তলের একটি ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া বেরতে থাকে। এদিন রবিবার হওয়ায় বাড়িতে সবাই ছিলেন। তাঁরা আতঙ্কে চিৎকার করতে করতে সকলে বেরিয়ে আসেন। এলাকার বাসিন্দারা দমকলে খবর দেন। প্রায় মিনিট পনেরো পর ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় দমকলের ২টি ইঞ্জিন। ততক্ষণে ফ্ল্যাটের বেডরুমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে তা লেলিহান শিখার আকার নেয়। আগুন ছড়িয়ে পড়লে আরও একটি ইঞ্জিনকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন দমকল কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শী সুদেব শীট জানিয়েছেন, পাঁচতলার উপরে আগুনের উৎস পর্যন্ত পৌঁছতে প্রাথমিকভাবে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের।
পুলিস ও দমকল বিভাগ সূত্রের খবর, ওই আবাসনের প্রত্যেক আবাসিককে বাইরে নিরাপদে বের করে নিয়ে আসা হয়। তবে আগুন আসবাবপত্রে ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেকক্ষণ সময় লাগে। ঘটনাস্থল ঠান্ডা করতে আরও ঘণ্টাখানেক সময় লেগেছে। আবাসিকদের কথায়, ফ্ল্যাটের দু’টি ঘর সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। অনেক সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে জোড়াসাঁকো থানা এলাকার ঋতুরাজ হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে দম আটকে মৃত্যু হয়েছিল ১৪ জনের। ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হোটেল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে। এরপরেই কলকাতা পুলিস বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে ইতিমধ্যেই হোটেলের মালিক সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত শুক্রবার সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি রাসায়নিক কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বাইরে থেকে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যায়। ওইদিন রাতে নিউ টাউনের সেন্ট্রাল মলের অদূরে একটি সাইকেলের শোরুমে আগুন লেগে যায়। শহরে পরপর অগ্নিকাণ্ডের জেরে আতঙ্কে ভুগছেন বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠছে রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিয়ে। নিজস্ব চিত্র